আন্তর্জাতিক ফুটবল
ঘরের মাঠে খেলা হলেও লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে মালদ্বীপের বিপক্ষে সেরাটা নিংড়ে দেওয়ার বিকল্প দেখছেন না জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার তপু বর্মন।
Published : 12 Nov 2024, 07:50 PM
বছরের শেষটা জয়ে রাঙানো, এএফসি কাপের বাছাইয়ে ড্রয়ে পট-থ্রি-তে থাকতে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি- এমন লক্ষ্যগুলোর সাথে কোচ হাভিয়ের কাবরেরার ভবিষ্যৎও ঠিক করে দিতে পারে মালদ্বীপের বিপক্ষের দুটি প্রীতি ম্যাচ। এমন গুরুত্বপূর্ণ অভিযান সামনে রেখে কাবরেরা দলের কাছে চাইছেন দায়িত্বশীল ফুটবল। জামাল ভূঁইয়ার অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া তপু বর্মনও বললেন, জয় ছাড়া ভিন্ন কিছু ভাবছেন না তারাও।
দুই প্রীতি ম্যাচের প্রথমটিতে বুধবার বিকাল ৬টায় বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় মালদ্বীপের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গত বছর অক্টোবরে এই মাঠেই দুই দলের সবশেষ দেখায় ২-১ গোলে জিতেছিল কাবরেরার দল।
এবারের ম্যাচ দিয়ে নানা অভ্যন্তরীণ সমস্যার মধ্যে থাকা মালদ্বীপ বছর পর ফিরবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে। দুই মাস পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা বাংলাদেশের চাওয়া মূলত দুটি। প্রথমটি র্যাঙ্কিংয়ের উন্নতি করে এএফসি কাপের বাছাইয়ের ড্রয়ে পট-থ্রি-তে থাকা। দ্বিতীয়টি বছরের শেষ উইন্ডো জয়ের রঙে রাঙানো।
আসছে ডিসেম্বরেই বাফুফের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে কাবরেরার। এই দুই ম্যাচের ফল ঠিক করে দিতে পারে এই স্প্যানিশ কোচের ভবিষ্যৎ। কাবরেরা অবশ্য বলেছেন, এ নিয়ে ভাবছেন না তিনি। তার ভাবনা কেবল মালদ্বীপ ম্যাচ নিয়ে। মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে কোচ জানিয়ে রাখলেন নিজের চাওয়াটা।
“সত্যি বলতে, আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। আমরা শুরুতে কয়েকজন নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছিলাম, পরে বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়েরা যোগ দিয়েছিল, এরপর আমরা ফর্টিসের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি, যেটা ছিল ইতিবাচক ব্যাপার। আমি চাই, ছেলেরা সমর্থকদের জন্য খেলুক, দায়িত্ব নিয়ে খেলুক এবং ম্যাচ বাই ম্যাচ ভালো পারফরম্যান্স করুক।”
ফর্টিসের বিপক্ষে খেলা দুই প্রীতি ম্যাচের ফল যথাক্রমে ১-০ ও ৩-২। এই দুই ম্যাচে দলকে আক্রমণাত্মক ছকে খেলিয়েছেন কাবরেরা। সন্তানসম্ভাবা স্ত্রীর পাশে জামাল থাকতে চাওয়ায় তপুর বাহুতে উঠেছে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড; তিনি জানালেন, কোচের চাওয়া পূরণের বিষয়টি ভালোভাবেই আছে তাদের মাথায়।
“প্রস্তুতি খুবই ভালো। প্রতিটি ম্যাচে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইতিমধ্যে কোচ সব বলে দিয়েছেন। এ জায়গায় আমার মনে হয়, আমাদের খেলোয়াড়দের কি করণীয়, কি কাজ, সেটা সবাই জানে। কালকে প্রমাণ দিতে হবে আমাদের যে, আমরা কাজ করেছি, আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। দলের সবার প্রতি আমার বিশ্বাস আছে, বিশ্বাস রাখছি।”
“ফর্টিসের বিপক্ষে ওই ম্যাচ দুটোয় আমাদের জন্য জয় মূখ্য ছিল না, সেখানে আমরা কি করেছি, কি ভুল করেছি, সেটা আমরা বুঝতে চেষ্টা করেছি, কাজ করেছি, সেটা যদি আমরা মাঠে প্রয়োগ করতে পারি, তাহলে আশা করি ভালো করতে হবে।”
বয়সভিত্তিক দল ও জাতীয় নারী দল দেশকে আনন্দে ভাসিয়েছে। তপুর মনে হচ্ছে এবার তাদের পালা। চলতি বছরে খেলা ছয় ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে হারের পরিসংখ্যানও এই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার পেছনে ফেলতে মরিয়া।
“অনুর্ধ্ব-২০ দল এবং নারী দলকে আমরা অভিনন্দন জানাতে চাই। এখন আমাদের পালা, আমাদের মাঠে খেলা, নিশ্চিতভাবেই আমাদের এখানে ভালো ফল করতে হবে, এটা আমি বিশ্বাস করি।”
“দলের সবাই এটাই মনে করে যে, দুইটা ম্যাচে সেরাটা দিতে হবে। আমাদের লক্ষ্য এএফসির বাছাইয়ে ভালো করা, নিশ্চিতভাবে সেটা করতে হলে এখানে সেরাটা দিতে হবে। মৌসুমের শেষ ম্যাচ, আমরা চাই যে শেষ ভালো যার সব ভালো তার।”
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের (১৮৫তম) চেয়ে এগিয়ে মালদ্বীপ (১৬৩তম)। তবে সবশেষ তিন দেখায় বাংলাদেশের জয় দুটি, ড্র একটি। তপু এই পরিসংখ্যানও মনে রাখতে চান না। প্রতিপক্ষকে সমীহ করে পূরণ করতে চান নিজেদের লক্ষ্য।
“আমরা মালদ্বীপের সাথে যে ম্যাচগুলো খেলেছি এবং মালদ্বীপ অন্য যাদের সাথে খেলেছে, সেই ভিডিওগুলো আমরা দেখেছি, কোচ ওদের শক্তি এবং দুর্বলতার দিক নিয়ে কাজ করেছে। সবশেষ আমরা ভুটানের সাথে খেলেছি, এরপরে দুই মাসের গ্যাপ ছিল। তবে আমরা ফিট আছি। মালদ্বীপ শক্তিশালী দল, তাদেরকে আমরা সেই সম্মান দিয়ে মাঠে নামব।”