শতভাগ সাফল্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ সেরা হলো কার্লো আনচেলত্তির দল।
Published : 30 Nov 2023, 03:03 AM
শুরুতে পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা মুহূর্তেই সামলে নিল রেয়াল মাদ্রিদ। খানিক বাদে এগিয়েও গেল তারা। তবে নাপোলি হাল ছাড়ল না। জমে উঠল লড়াই। জমজমাট লড়াইয়ের শেষ দিকে আক্রমণের ঝড় তুলে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ল কার্লো আনচেলত্তির দল।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচটি ৪-২ গোলে জিতেছে রেয়াল। টানা পাঁচ জয়ে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করল প্রতিযোগিতার রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা।
জিওভানি সিমেওনের গোলে নাপোলি এগিয়ে যাওয়ার পরপরই একক নৈপুণ্যে সমতা টানেন রদ্রিগো। একটু পর জুড বেলিংহ্যামের গোলে এগিয়ে যায় রেয়াল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আন্দ্রে ফ্রাঙ্ক জাম্বো আনগিসার গোলে সমতা টানে নাপোলি।
তবে, সেরি আ চ্যাম্পিয়নদের পয়েন্ট পাওয়ার আশা ভেস্তে যায় শেষ দিকে। নিকো পাস ও হোসেলুর গোলে সমর্থকদের জয় উপহার দেয় স্বাগতিকরা।
শেষ রাউন্ডের অনিশ্চয়তা ঝেড়ে ফেলতে এখানে পূর্ণ তিন পয়েন্টের দরকার ছিল নাপোলির। শুরুটাও দারুণ করে তারা। নবম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে শাণানো আক্রমণে এগিয়ে যায় দলটি।
সতীর্থের লম্বা ক্রস দূরের পোস্টে পেয়ে গোলমুখে বল বাড়ান জিওভান্নি দি লরেন্সো, আর আলতো টোকায় বল ঠিকানায় পাঠান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড জিওভানি সিমেওনে। রেয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন অবশ্য ঝাঁপিয়ে বল ফিরিয়েছিলেন, কিন্তু তার আগেই গোললাইন পেরিয়ে যায় বল।
নাপোলির আনন্দ অবশ্য দুই মিনিটও স্থায়ী হয়নি। পুনরায় খেলা শুরু হতে প্রথম আক্রমণেই দুর্দান্ত গোলে সমতা টানেন রদ্রিগো। ব্রাহিম দিয়াসের পাস ধরে বক্সে ঢুকে আড়াআড়ি কয়েক পা এগিয়ে জায়গা বানিয়ে জোরাল শট নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড, দূরের পোস্ট দিয়ে বল খুঁজে পায় ঠিকানা।
এগিয়ে যেতেও দেরি করেনি রেয়াল। দাভিদ আলাবা উঁচু করে ডি-বক্সে থ্রু বল বাড়ান আর ঠিক সময়ে জায়গামতো গয়ে হেডে গোলটি করেন দারুণ ছন্দে থাকা বেলিংহ্যাম।
আসরে প্রথম তিন ম্যাচে একটি করে গোল করা বেলিংহ্যাম চোটের কারণে খেলতে পারেননি গত রাউন্ডে। ফিরেই আবারও স্বরূপে হাজির এই ইংলিশ মিডফিল্ডার।
বিরতির পর খেলা শুরু হতেই সমতাসূচক গোল পেয়ে যায় নাপোলি। সতীর্থের পাস ধরে ডি-বক্সের মাঝ বরাবর কাটব্যাক করার চেষ্টা করেন জাম্বো আনগিসা। কিন্তু মাঝপথে ঠেকিয়ে দেন দানি সেবাইয়োস। ফিরতি বল পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে জোরাল শটে জালে পাঠান ক্যামেরুনের মিডফিল্ডার জাম্বো আনগিসা।
৫৭তম মিনিটে দানি সেবাইয়োসের বদলি নামার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই গোল পেতে পারতেন হোসেলু। কিন্তু ফেরলঁদ মঁদির পাস ছয় গজ বক্সের বাইরে পেয়ে ঠিকমতো টোকা দিতে পারেননি স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। বল তার হাঁটুতে লেগে ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে চলে যায়।
৭৭তম মিনিটে আন্টোনিও রুডিগারের জোরাল হেড দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকান নাপোলি গোলরক্ষক আলেক্স মেরেত। পরের দুই মিনিটে আরও দুটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে রেয়াল। বেলিংহ্যামের অ্যাক্রোবেটিক শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যাওয়ার পরের মিনিটে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড করেন হোসেলু।
চাপ ধরে রেখে ৮৪তম মিনিটে জয়সূচক গোল পেয়ে যায় রেয়াল। রুডিগারের পাস ধরে কিছুটা এগিয়ে অনেক দূর থেকে শট নেন নিকো পাস। ঝাঁপিয়ে বলে হাতও ছুঁয়েছিলেন মেরেত; কিন্তু রুখতে পারেননি।
আর যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে নাপোলির ঘুরে দাঁড়ানোর শেষ আশাটুকুও শেষ করে দেন হোসেলু। কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্টের পর বেলিংহ্যামের পাস পেয়ে কাছ থেকে গোলটি করেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
টানা পাঁচ জয়ে পূর্ণ ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষে রেয়াল। ৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নাপোলি।
অন্য ম্যাচে ইউনিয়ন বার্লিনের সঙ্গে ১-১ ড্র করা ব্রাগা ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে। তাদেরও নকআউট পর্বে ওঠার আশা বেঁচে আছে।
শেষ রাউন্ডে মুখোমুখি হবে নাপোলি ও ব্রাগা।
২ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে ইউনিয়ন বার্লিন।