বিশ্বকাপ বিরতিতে যাওয়ার আগে ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে পয়েন্ট হারাল পেপ গুয়ার্দিওলার দল।
Published : 12 Nov 2022, 07:41 PM
বিশ্বকাপ বিরতির আগে শেষটা বড্ড বাজে হলো ম্যানচেস্টার সিটির। ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে শুরুর দিকে পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণের ঢেউ তুলল দলটি। বিরতির আগে গোলও পেল তারা। কিন্তু শতচেষ্টায়ও পারল না ব্যবধান গড়ে দিতে। উল্টো শেষ দিকে দুর্দান্ত এক প্রতি-আক্রমণে অসাধারণ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রেন্টফোর্ড।
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে লিগ টেবিলের মাঝামাঝি থাকা দলটি। আইভান টনির গোলে ব্রেন্টফোর্ড এগিয়ে যাওয়ার পর সমতা টানেন ফিল ফোডেন। তবে একেবারে শেষ সময়ে নিজের দ্বিতীয় গোলে চ্যাম্পিয়নদের স্তব্ধ করে দেন টনি।
লিগে টানা চার জয়ের পর হারের তেতো স্বাদ পেল সিটি। এর ফলে নিশ্চিত হয়ে গেল, লিগ টেবিলের শীর্ষে থেকেই সামনের বড় দিন উপভোগ করবে আর্সেনাল। গত ১৫ মৌসুমে এমন ঘটনা দেখা যায়নি।
শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলা ব্রেন্টফোর্ড ষষ্ঠ মিনিটেই গোল পেতে পারতো তারা। বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে রিকো হেনরি ক্রস বাড়ান ডি-বক্সে। এদেরসন লাফিয়ে বলে হাত ছোঁয়ালেও ঠেকাতে পারেননি, চলে যায় ফাঁকায় বাহইয়ান এমবেমুর পায়ে। তার পাস ধরে টনির শট কোনোমতে ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক।
উজ্জীবিত ফুটবলে ষোড়শ মিনিটে এগিয়ে যায় ব্রেন্টফোর্ড। ডান দিক থেকে সতীর্থের ফ্রি কিকে হেডে ছয় গজ বক্সের সামনে বল পাঠান বেন মি। আর ডিফেন্ডার এমেরিক লাপোর্তের চ্যালেঞ্জ সামলে দারুণ হেডে গোলটি করেন বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পাওয়া ইংলিশ ফরোয়ার্ড টনি।
গোল খেয়ে যেন তেতে ওঠে সিটি। দুই মিনিট পরই স্কোরলাইনে সমতা আসতে পারতো। তবে কেভিন ডে ব্রুই্নের ক্রসে আর্লিং হলান্ডের হেড একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
অনেক চেষ্টার পর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে গোলের দেখা পায় স্বাগতিকরা। ডান দিক থেকে ডে ব্রুইনের কর্নারে সতীর্থের মাথা ছুঁইয়ে আসা বল দূরের পোস্টে ফাঁকায় পান ফোডেন। প্রথম ছোঁয়ায় বুলেট গতির কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
৬৬তম মিনিটে যে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করলেন ইলকাই গিনদোয়ান, দিনশেষে সেটার হতাশা অনেক বড় হয়ে উঠল। ডি-বক্সে হলান্ডের উদ্দেশ্যে ছোট করে থ্রু বল বাড়িয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন জার্মান মিডফিল্ডার। এরপর তরুণ সতীর্থের ফিরতি পাস পান ফাঁকায়; কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন গিনদোয়ান।
৮৪তম মিনিটে প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জের মুখে জোয়াও কানসেলো পড়ে গেলে পেনাল্টির জোরাল আবেদন করে সিটির অন্য খেলোয়াড়রা। তবে রেফারি ডাইভ দেওয়ার অপরাধে কানসেলোকে দেখান হলুদ কার্ড। টিভির পর্দায় এই পর্তুগিজ ডিফেন্ডারকেও প্রতিপক্ষের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে দু:খ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার লাপোর্ত মাথায় চোট পেলে অনেকটা সময় ধরে মাঠেই তার চিকিৎসা চলে। শুরুতে তার বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা জাগলেও পরে তা কেটে যায়। মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে পুরোটা সময় খেলেন তিনি।
তখন সময় নষ্ট হওয়ায় নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে ১০ মিনিট যোগ করা সময় দেওয়া হয়।
তারই অষ্টম মিনিটে প্রতিপক্ষের কর্নার সামলে পাল্টা-আক্রমণে গিয়ে জয়সূচক গোলটি করেন টনি। ডান দিক থেকে সতীর্থের গোলমুখে বাড়ানো বল অনায়াসে জালে পাঠান তিনি।
চলতি লিগে ১৪ ম্যাচে টনির গোল হলো ১০টি।
১৪ ম্যাচে ১০ জয় ও ২ ড্রয়ে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সিটি। এক ম্যাচ কম খেলে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল।
১৫ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ১০ নম্বরে ব্রেন্টফোর্ড।