মালদ্বীপ, মঙ্গোলিয়া-দুই দলের মাঝে আছে শক্তির পার্থক্য। দল দুটির খেলার ধরনও আলাদা। হাভিয়ের কাবরেরার চোখে মালদ্বীপ খেলে বিল্ড-আপ ফুটবল, মঙ্গোলিয়া ‘ডিরেক্ট ফুটবল’ খেলতে পারদর্শী। অর্থাৎ দ্রুত আক্রমণে ওঠার কৌশল তাদের। আসছে ম্যাচে তাই কৌশল বদলের ইঙ্গিত দিলেন বাংলাদেশ কোচ।
Published : 28 Mar 2022, 05:06 PM
সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টায় প্রীতি ম্যাচে মঙ্গোলিয়ার মুখোমুখি হবে স্বাগতিকরা। এ ম্যাচ সামনে রেখে সিলেটে তিন দিন অনুশীলন সেরেছে বাংলাদেশ। নতুন বছরে নিজেদের মাঠে প্রথম ম্যাচ জিততে মুখিয়ে আছে দল।
একই চাওয়া নিয়ে কদিন আগে মালদ্বীপে নোঙর ফেলেছিল বাংলাদেশ। চাওয়া পূরণ হয়নি। মালেতে ২-০ গোলের হারের ক্ষত ভুলে মঙ্গোলিয়া ম্যাচের জন্য দল গুছিয়ে নিতে কাবরেরা মনোযোগী ছিলেন রিকভারির দিকে। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এই স্প্যানিশ কোচ জানালেন সবকিছুই এগোচ্ছে পরিকল্পনামাফিক।
“মালদ্বীপ থেকে ফেরার পর আমরা রিকভারির দিকে গুরুত্ব দিয়েছি। একই সাথে ভাবছি নিজের পরিকল্পনার সাথে খেলোয়াড়দের কিভাবে খাপ খাওয়ানো যায়। টেকনিক্যাল স্টাফদের সঙ্গেও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। সিলেটে এসে বিকেএসপিতে প্রথম প্র্যাকটিস সেশন খুব ভালো ছিল, খেলোয়াড়রা খুব সতেজ ছিল। গতকাল প্রথমবার এ মাঠে অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছি। যেটা খেলোয়াড়দের উন্নতিতে অনেক কাজে দিয়েছে। মাঠ বেশ ভালো; ভালো ফুটবল খেলার জন্য যেটা গুরুত্বপূর্ণ।”
“খুবই ভালো সেশন গেছে আগের দিন, ম্যাচের আগে আরেকটা সেশন পাব। জয়ের লক্ষ্য নিয়েই আমরা মাঠে নামব। জয়টা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। মালদ্বীপেও আমরা একই লক্ষ্য নিয়ে গিয়েছিলাম। আমরা অবশ্যই দেশকে জয় এনে দিতে চাই। আমরা নিজেদের পরিকল্পনা এবং কৌশল কতটুকু রপ্ত করতে পারি এবং মাঠে প্রয়োগ করতে পারি, এগুলোর উপরই নির্ভর করে ম্যাচের ফলাফল।”
মালেতে খেলা ৪-৪-২ ছকে সাফল্য মেলেনি। সিলেটের অনুশীলনে ৪-১-৪-১ ফরমেশনে দলকে পরখ করেছেন কাবরেরা। যদিও কৌশল নিয়ে মুখ খোলেননি, কিন্তু ৩৭ বছর বয়সী কোচ ইঙ্গিত দিয়েছেন নতুন ছকে খেলার।
“দুটি ম্যাচের অ্যাপ্রোচ এবং আইডিয়া (পরিকল্পনা ও মনোভাব) ভিন্ন রকম হবে। মালদ্বীপ এমন একটা দল, যারা টেকনিক্যালি মেধাবী, তারা বিল্ড-আপের সময় সম্ভবত বেশি ঝুঁকি নেয়। আমার মনে হয়েছে মঙ্গোলিয়া প্রাণ প্রাচুর্যে ভরপুর দল। মালদ্বীপের মতো কৌশলী নয়, সম্ভবত ডিরেক্ট ফুটবল খেলে।”
“তবে নিজেদের গেম পরিকল্পনা নিয়েই আমাদের মনোযোগী হতে হবে। কিভাবে আমরা কৌশলগুলো রপ্ত করব, মাঠে প্রয়োগ করব, প্রতিপক্ষের চেয়ে আমাদেরকে এদিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। আগের ম্যাচের মতো ৪-৪-২ এর বদলে এবার নতুন কিছু দেখতে পারবেন। মালদ্বীপে আমরা ওটা করেছি, যাতে মালদ্বীপের বিল্ড-আপ ফুটবল আটকে দিতে পারি।”
সংবাদ সম্মেলনে ঘুরেফিরে এসেছে মালদ্বীপের ব্যর্থতার প্রসঙ্গ। ওই ম্যাচে শুরুর দিকে গোলের সুযোগ এসেছিল, কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি সুমন রেজা। পরে গোল হজম করে এলোমেলো হয়ে যায় দল। কাবরেরা অবশ্য মালের ম্যাচের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে ভাবছেন।
“যদি মালদ্বীপ ম্যাচের কথা ধরা হয়, আমাদের কতগুলো ইতিবাচক দিক ছিল, যেগুলো আমাদের পরিকল্পনার সাথে মিলে যায়। রক্ষণ ভালো ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে বিল্ড-আপ ফুটবল খেলতে পেরেছি। কিছু ভালো আক্রমণ করতে পেরেছি, বাকবদলের মুহূর্ত ছিল, যখন আসলে আমরা গোল খেয়েছি, তখন থেকে আমাদের খেলা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। এখানে অনুশীলনে এগুলো নিয়ে আমরা বেশি কাজ করেছি।”
ফিনিশিংয়ে ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতা নিয়ে হা-পিত্যোশের অন্ত নেই। কাবরেরা অবশ্য আস্থা হারাচ্ছেন না আক্রমণভাগের উপর। তারা গোল করার পথেই আছে বলে মনে হচ্ছে তার।
“মালেতে প্রথমার্ধে আমরা একটা গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলাম, সুযোগটা কাজে লাগানো গেলে, সেটা হয়ত ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দিতে পারত। স্কোরিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা সুযোগ কাজে লাগানোর পথেই আছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিনিশিং দিতে পারছি না। এটা নিয়ে কাজ করছি।”
“রক্ষণ আমাদের জমজমাট। আক্রমণভাগে রাকিব ও সুমন ভালো করছে। আবারও বলছি, আমরা নিজেদের নিয়েই ভাবছি। মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে যেন মালদ্বীপ ম্যাচের ইতিবাচক দিকগুলো থাকে, পাশাপাশি চেষ্টা করছি ওই ম্যাচের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে যেন আমরা মাঠে নামতে পারি।”