এশিয়ান কাপ বাছাই
এশিয়ান কাপের তৃতীয় রাউন্ডের বাছাইয়ের শুরুটা দুর্দান্ত করে পরের ধাপে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল।
Published : 20 Dec 2024, 03:53 PM
আসছে বছরে বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ফুটবল দলের সামনে আছে এশিয়ান কাপের তৃতীয় রাউন্ডের বাছাই। যেটি শুরু হবে মার্চে, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। বাছাই নিয়ে বড় স্বপ্নই দেখছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল। কিন্তু নতুন বছরে বাংলাদেশের ডাগআউটে কাকে দেখা যাবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।
পুরুষ ও নারী জাতীয় ফুটবল দলের দুই কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ও পিটার জেমস বাটলারের চুক্তির মেয়াদ ফুরাবে ৩১ ডিসেম্বরে। বাফুফের হাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় মাত্র ১১ দিন। তিন বছর ধরে পুরুষ দলকে কোচিং করাছেন কাবরেরা, ছয় মাস আগে মেয়েদের দলের দায়িত্ব নিয়ে উইমেন’স সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন বাটলার। দুজনের ভবিষ্যৎ ঝুলে আছে এখনও।
দুই কোচের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাবিথ প্রশ্নের মুখে পড়েন শুক্রবার গুলশানে নিজের বাসভবনে লেস্টার সিটির ডিফেন্ডার হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশের হয়ে খেলা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে। দুই কোচের সাফল্য-ব্যর্থতার খেরোখাতা দেখে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
“আমরা নতুন কিংবা পুরাতন কোচ নিয়ে কথা বলছি না। আমরা প্রতিটা দিন চুক্তি অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি। বর্তমান কোচের চুক্তি রয়েছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা এই কোচ নিয়েই কথা বলব। জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে আমরা নতুন মৌসুমের কোচ নিয়ে কথা বলব। তখন অবশ্যই সিদ্ধান্ত যেটাই হোক, যেভাবেই হোক, আপনাদের জানানো হবে।”
“শুধু কোচের পারফরম্যান্স দেখলেই হবে না। আমাদের দেখতে হবে দলকে কী কী সুবিধাদি দেওয়া হয়েছে, মাঠের পারফরম্যান্স দেখতে হবে। তো আমি মনে করি, যে অল্প সময় আমি পেয়েছি, তাতে মূল্যায়ন করার সময়টা আসেনি। তবে যে সকল তথ্য, উপাত্ত আমরা এবং জাতীয় দল কমিটি বিবেচনা করব, আমিও সেগুলো নিচ্ছি। তারপর সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় যে খুব বেশি আছে, তাও নয়। আগামী মার্চেই মাঠে গড়াবে ২০২৭ এশিয়ান কাপের তৃতীয় রাউন্ডের বাছাই। ভারত, হংকং ও সিঙ্গাপুরের সাথে ‘সি’ গ্রুপে আছে বাংলাদেশ। বাফুফে সভাপতি বাছাই নিয়ে দেখছেন বড় স্বপ্ন।
“আমার কাছে এই মুহূর্তে কোনও পরিষ্কার তথ্য নাই; কারণ আমরা এখনও প্ল্যানিং স্টেজে আছি। এজন্য ক্ষমা চাইছি যে, আপনাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর এখন দিতে পারছি না। এএফসির সূচি আমরা মাত্রই পেয়েছি। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। অবশ্যই আমরা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলব। এটা আমরা অনেক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি।”
“ভারত আমাদের গ্রুপের শীর্ষ বাছাই দল। প্রথম ম্যাচে জয় পেলে আমরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নও দেখতে পারি। একটা দলই কিন্তু পরের রাউন্ডে যাবে। তো প্রথম ম্যাচ যদি আমরা ভালো করতে পারি, তাহলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে আমরা এগিয়ে যেতে পারব। লিগের প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পরই আমরা নতুন পরিকল্পনা করব। নূন্যতম চার সপ্তাহের একটা ক্যাম্প আমরা করব। এগুলো প্রাথমিক পর্যায়ের কথা বলছি, বিস্তারিত পরে বলতে পারব।”
চলমান প্রিমিয়ার লিগ ও ফেডারেশন কাপের ভেন্যুর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। লিগের খেলা বন্ধ রেখে মাঠ ‘ভাড়া’ দেওয়ার খবরও এসেছে গণমাধ্যমে। বিষয়গুলো নজরে এসেছে তাবিথের। দ্রুতই বিষয়গুলো সমাধানের আশ্বাস দিলেন তিনি।
“আমাদের বর্তমানে তিনটা অ্যাডিশনাল মাঠ আছে, যেখানে বাংলাদেশের টপ খেলোয়াড়দের খেলার উপযুক্ত নয়। কিছু মাঠ আমরা একেবারে শেষ মুহূর্তে পেয়েছি। এই বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করেছি। এভাবে যদি তারা আমাদের শেষ মুহূর্তে মাঠ দেয়, মাঠ বরাদ্দ দেওয়ার পরও তারা ব্যবহারের জন্য নেয়। মাঠ বরাদ্দ পাওয়ার পর তা ঠিক রাখা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের দায়িত্ব। মাঠ নষ্ট করার অধিকারতো অন্যদের দেওয়া যায় না।”
“মাঠের পাশপাশি গ্যালারিও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে, যেন দর্শকরা মাঠে গিয়ে ভালোভাবে খেলা দেখতে পারে। এছাড়া স্টেডিয়ামে চেঞ্জিং রুম, বাথরুম সব কিছুরই সমস্যা রয়েছে। মাঠ এবং ফ্ল্যাড লাইটসহ সব কিছু মিলিয়ে আমরা স্টেডিয়ামগুলোকে আন্তর্জাতিক মানের করতে চাই। এনএসসি-এর কাছে আমার আবেদন থাকবে যেন তারা আমাদের মাঠ বরাদ্দ দিয়ে আবার নিয়ে না যায়।”
“চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা চেষ্টায় আছি সেটা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আওতায় নিয়ে আসতে। এছাড়া জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ শেষ হয়নি। তবে মাঠ সমস্যার সমাধানের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। খেলোয়াড়দের কাছে আমি কৃতজ্ঞ তারা এই মাঠে খেলা চালিয়ে যাচ্ছে।”