ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ
বর্তমান দলে আরও কিছু যোগ করে উন্নতির ধারায় থাকতে চান জার্মানি কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমান।
Published : 06 Jul 2024, 07:51 PM
যদিও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে পথচলা থেমেছে কোয়ার্টার-ফাইনালে, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্সে জার্মানি দেখিয়েছে স্বরূপে ফেরার পথে আছে তারা। কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমান তাই সবকিছু ভেঙে-চুরে একেবারে নতুন করে গড়ার কিছু দেখছেন না। ইউরো মিশন ব্যর্থ হওয়ার হতাশায় অশ্রুসজল চোখে বললেন, সবকিছু ঢেলে না সাজিয়ে, বর্তমান দলের সঙ্গে আরও শক্তি যোগ করে থাকতে চান উন্নতির ধারায়।
স্টুটগার্টে শুক্রবার প্রথম কোয়ার্টার-ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে স্পেনের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে যায় জার্মানি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দানি ওলমোর গোলে পিছিয়ে পড়া দলকে শেষ দিকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন ফ্লোরিয়ান ভিরৎজ, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ১১৯তম মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেন মিকেল মেরিনো। থেমে যায় ইউরোর তিনবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানির যাত্রা।
ঘরের মাঠের ইউরো নিয়ে জার্মানদের প্রত্যাশার পারদ চড়েছিল উঁচুতে, কিন্তু মুলার-ক্রুসরা পারেনি তা পূরণ করতে। তবে গত আট বছর বিবর্ণতার খোলসে বন্দি থাকা দলের বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত ঠিকই মিলেছে এবার। তাই সবকিছু ঢেলে সাজানোর প্রয়োজনীয়তা দেখছেন না নাগেলসমান।
“(জার্মানির হয়ে) অন্য কোনো টুর্নামেন্টে আমি ছিলাম না, কিন্তু আমাকে বলা হয়েছে, সবসময় এমনটা হয়নি যে, ছয় সপ্তাহ একসঙ্গে থাকার পর সব খেলোয়াড় অশ্রুসিক্ত চোখে ক্যাম্প ছেড়েছে,” ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে নাগেলসমানও চোখ মুছতে মুছতে বলেন।
“পুরোপুরি নতুন শুরু নয়, বরং এখন আমরা চেষ্টা করব নতুন শক্তি যোগ করার। নেশন্স লিগের ম্যাচগুলো (আগামী সেপ্টেম্বর থেকে) আমরা কাজে লাগাব আরও উন্নতির মঞ্চ হিসেবে।”
২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপ জয়ের পর গত এক দশকে জার্মানি আর কোনো সাফল্য পায়নি। ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে তারা অবিশ্বাস্যভাবে ছিটকে যায় গ্রুপ পর্ব থেকে। এবার ইউরোতেও পারল না। পরবর্তী বড় টুর্নামেন্ট দুই বছর পরের ২০২৬ বিশ্বকাপ।
এরই মধ্যে অবশ্য জার্মান দলে ভাঙা-গড়ার সুর একটু হলেও বাজতে শুরু করেছে। টনি ক্রুস আগেই বলেছিলেন, এবারের ইউরো তার শেষ। ধারণা করা হচ্ছে, টমাস মুলার, মানুয়েল নয়ারদের মতো আরও কয়েকজন চুকিয়ে দিতে পারেন আন্তর্জাতিক ফুটবলের পাঠ।
এই ধারণা সত্যি হলেও দুর্ভাবনার কিছু দেখছেন না নাগেলসমান। ভাঙা গলায়, অশ্রুসিক্ত চোখে তিনি বললেন, পরের বিশ্বকাপে জার্মানির জার্সি গায়ে তোলার মতো যথেষ্ট খেলোয়াড় আছে তার তাঁবুতে।
“এখনও আমরা উন্নতির প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি এবং গত কয়েক বছরের (ব্যর্থতার) পর এটা স্বাভাবিক। আমাদের যে স্কোয়াড আছে, সেখানে বিশ্বকাপে খেলার মতো ২৬, ২৭, ২৮ জন খেলোয়াড় এখনও আছে।”
“দলের একটা ভিত টনি ক্রুসকে আমরা মিস করব এবং দেখি বাকিরা কী সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সবকিছু ঢেলে সাজানোর কোনো প্রয়োজন দেখি না আমি। কেননা, বর্তমান দলের আবহ খুবই ভালো এবং আরও উন্নতির জন্য শক্ত ভিতও আছে। যেভাবে শুরুটা করেছিলাম, সেটা এগিয়ে নেওয়াই কাজ হবে আমার।”
ভিরৎজ, জামাল মুসিয়ালার মতো তরুণরা জার্মানির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি। নাগেলসমান এখন খুব করে চাইছেন, সামনের পথচলায় সমর্থকদের পাশে পেতে, যাতে উন্নতির ধারায় থাকাটা মসৃণ হয়।
“সবসময় বলেছি, অতীতের কয়েকটি বাজে টুর্নামেন্টের পর ঐক্যবদ্ধ সমর্থকদের আমাদের পাশে প্রয়োজন। আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল এবং বিশ্বাস করি, আমরা ভালো কিছু করতে পারি। সমর্থকদের আরও সাফল্য, শিরোপা দিতে পারলে ভালো লাগবে আমার।”