স্প্যানিশ ফুটবল
Published : 05 May 2025, 07:52 PM
মাঠে নামলেই প্রতিপক্ষের রক্ষণের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন লামিনে ইয়ামাল, বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ছুটছেন রবের্ত লেভানদোভস্কি আর নিজেকে নতুন রূপে খুঁজে পেয়েছেন রাফিনিয়া-এই তিনের সমন্বয়ে দারুণ ছন্দে এগিয়ে চলেছে বার্সেলোনা। এক্ষেত্রে টনি ক্রুসের অভিমত অবশ্য ভিন্ন। সাবেক জার্মান তারকার মতে, কাতালান দলটির ধারাবাহিক সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা মিডফিল্ডার পেদ্রির।
চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সেলোনার আক্রমণভাগ যেন ফিরিয়ে এনেছে তাদের সোনালী অতীত। অনেক ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে গোল উৎসব করতে দেখা গেছে দলটিকে। আর তাতে সবচেয়ে বড় অবদান আক্রমণভাগের ওই তিন তারকার; লেভানদোভস্কি, রাফিনিয়া ও ইয়ামাল মিলে মোট ৮৬টি গোল করেছেন।
ক্লাবটিও ছুটছে তৃতীয়বারের মতো ট্রেবল জয়ের লক্ষ্যে। ইতোমধ্যে সেই যাত্রায় প্রথম ধাপ পাড়ি দিয়েছে তারা, কোপা দেল রে শিরোপা জিতে। বাকি লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পথেও ভালোভাবে আছে দলটি।
তাদের এই অসাধারণ যাত্রায় পেদ্রিকেই বড় কারিগর হিসেবে দেখছেন গত বছর ফুটবল ক্যারিয়ারে ইতি টানা তারকা মিডফিল্ডার ক্রুস। নিজের পডকাস্টে তার মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।
“আমার কাছে, পেদ্রির মতো একজন খেলোয়াড় লামিনে ইয়ামাল, রাফিনিয়া ও লেভানদোভস্কির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। তারা হয়তো ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দিতে পারে; কিন্তু সেটা করতে, পেদ্রি তার পজিশনে বর্তমানে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়।”
“সে এমন খেলোয়াড়, না খেললেই তার অভাব অনুভূত হয়, প্রতিপক্ষ যে দলই হোক না কেন। সে কেবল গোল বা অ্যাসিস্ট করে না, সে সমস্যার সমাধান দেয়।”
বার্সেলোনায় ক্যারিয়ারে ঝলমলে শুরুর পর, গত কয়েক মৌসুমে চোটে বেশ ভুগতে হয় পেদ্রিকে। তবে সেই সমস্যা কাটিয়ে চলতি মৌসুমে আবারও অসাধারণ হয়ে উঠেছেন তিনি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ক্লাবের হয়ে এবার মোট ৫৪ ম্যাচ খেলে ৬টি গোল করেছেন তিনি, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন সাতটি।
২২ বছর বয়সী এই স্প্যানিয়ার্ডের দিকে আসছে বাঁচা-মরার লড়াইয়েও নিশ্চয় তাকিয়ে থাকবে তার দল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে মঙ্গলবার ইন্টার মিলানের মাঠে খেলবে বার্সেলোনা। গত সপ্তাহে প্রথম লেগ ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছিল।
সাবেক রেয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রুসের চোখে ইউরোপ সেরার মঞ্চে এবার সব ম্যাচেই অনেক ভালো খেলেছেন পেদ্রি।
“এই মৌসুমে পেদ্রি কী করছে, তা দেখছি আমি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রতি ম্যাচেই সে তার প্রতিপক্ষের চেয়ে ভালো করেছে।”
“লা লিগায় তার ও তার প্রতিপক্ষের মধ্যে ব্যবধানটা আরও বড়। তার মতো একজন খেলোয়াড় হারালে, দল সেই শূন্যতা বুঝতে পারবে। সে সবার সেরা।”
লা লিগায় শিরোপা ভাগ্য বার্সেলোনার হাতেই আছে। চার রাউন্ড বাকি থাকতে রেয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষে আছে তারা। আগামী সপ্তাহে এই দুই দলের ক্লাসিকো লড়াইয়ের ফল এবারের শিরোপা লড়াইয়ে বড় প্রভাব রাখতে পারে।
রেয়ালে খেলার সুবাদে ক্রুস নিজেও কয়েকবার পেদ্রির মুখোমুখি হয়েছেন। সেই অভিজ্ঞতাও জানালেন বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবলার।
“(পেদ্রির বিপক্ষে লড়াই কতটা কঠিন) আমার নিজেও সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে, বিশেষ করে একবার। সে আমাদেরকে (রেয়াল মাদ্রিদ) ঘরের মাঠে বিধ্বস্ত করেছিল। এক বা দুইবার আমি ভেবেছিলাম তাকে আটকাতে পারব, কারণ তাকে তেমন ক্ষিপ্র গতির মনে হয় না, তবে সে খুব ভালো ড্রিবল করে এবং আমি তাকে ফাউল করেও আটকাতে পারিনি।”
“সে মেসির মতো নয়, যার গতি ও মুভমেন্ট চোখে পড়ে। পেদ্রিকে তেমন দ্রুত গতির খেলোয়াড় মনে হয় না, কিন্তু আসলে সে তাই।”