Published : 05 May 2025, 12:22 PM
প্রশ্নটি মৌসুমজুড়েই ছিল। এখন আর্দা গিলের যেভাবে পারফর্ম করছেন, তাতে প্রসঙ্গটি উচ্চকিত হচ্ছে আরও। এমন একজন ফুটবলারকে কেন নিয়মিত খেলার সুযোগ দেননি কার্লো আনচেলত্তি? সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে ম্যাচ শেষে সেটির ব্যাখ্যা দিলেন রেয়াল মাদ্রিদ কোচ। তুলে ধরলেন তুরস্কের প্রতিভাবান এই ফুটবলারের সম্ভাবনার কথাও।
২০২৩ সালে তুর্কি ক্লাব ফেনারবাচে থেকে রেয়াল মাদ্রিদে পাড়ি জমান গিলের। তার প্রতিভা ও সম্ভাবনা নিয়ে তুরস্কের ফুটবলে আলোচনা ছিল অনেক দিন ধরেই। স্বপ্নের ক্লাব রেয়ালে প্রথম মৌসুমে স্বাভাবিকভাবেই খুব বেশি খেলার সুযোগ তিনি পাননি। তবে প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছেন মাঝেমধ্যে। এই মৌসুমে তার ওপর আনচেলত্তি আরও বেশি ভরসা রাখবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু এবারও খুব বেশি সুযোগ তিনি পাননি।
তাকে নিয়মিত না খেলানোয় প্রশ্ন উঠেছে মৌসুম শুরুর কিছুদিন পর থেকেই। পরে চোটজর্জর রেয়ালের যখন চরম দুঃসময়, তখনও শুরুর একাদশে জায়গা খুব একটা পাচ্ছিলেন না এই উইঙ্গার।
মৌসুমের শেষ ভাগে এসে অবশ্য পাল্টে গেছে চিত্র। দারুণ পারফরম্যান্সে নজর কেড়েছেন ২০ বছর বয়সী ফুটবলার। দুর্দান্ত কিছু গোলের পাশাপাশি জাদকুরি সব পাস আর স্কিল দেখিয়েছেন। সেল্তা ভিগোর বিপক্ষেও লা লিগায় রোববার তার অসাধারণ গোলেই এগিয়ে যায় রেয়াল। ম্যাচজুড়ে আবারও তার পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া।
ম্যাচের পর গিলেরকে নিয়ে বেশ প্রশ্ন ছুটে গেল আনচেলত্তির দিকে। রেয়াল মাদ্রিদ কোচ বললেন, কয়েক মাস আগের চেয়ে উন্নতি করেছেন বলেই তরুণ তারকাকে নিয়মিত সুযোগ দেওয়া হচ্ছে এখন।
“ সে উন্নতি করছে এবং এটা একজন ফুটবলারের অগ্রগতির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যে রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলতে মরিয়া, যে দারুণ মানসম্পন্ন ও অনেক পরিশ্রম করেছে।”
“গত সেপ্টেম্বরের গিলের আর আজকের গিলের এক নয়। সে বদলে গেছে অনেকটা। তার শারীরিক আকৃতি বদলেছে। এই বছর সে ভালো করছে, সামনের বছরগুলোয় আরও ভালো করবে। রেয়াল মাদ্রিদের শুরুর একাদশে নিয়মিত হওয়ার সামর্থ্য তার আছে…।”
গিলেরকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়া বা উপেক্ষা করার অভিযোগও উড়িয়ে দিলেন আনচেলত্তি।
“আমার দায়িত্ব গোটা স্কোয়াড ভালোভাবে সামলানো, শুধু একজন ফুটবলারকে নয়। কখনও কখনও এটা কোনো এক ফুটবলারের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে অন্যদের চেয়ে। আগেও বলেছি, রেয়াল মাদ্রিদে শুরুর একাদশে জায়গা পেতে হলে আগে বেঞ্চে মানিয়ে নিতে হবে।”
“সামনের বছরগুলোতে সে আরও ভালো করবে। বেঞ্চে থাকার সময়টায় সে ভালো করেছে, বিচলিত হয়নি এবং খুব ভালো অগ্রগতি করেছে।”
পর্যাপ্ত সুযোগ না পেয়ে গিলেরের আশেপাশের অনেকেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলছিলেন বলে জানালেন আনচেলত্তি। কোচের মতে, এখন তাদের উপলব্ধি ভিন্ন।
“এখন তাকে অনেক ভালো মনে হচ্ছে। প্রত্যাশার চাপও এখন কম। শুরুতে চাপটা বেশিই ছিল ওর বয়স অনুযায়ী। এখন সে ভালোভাবে সামলাতে পারছে। আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী। এখন বুঝতে পারছে, একটি ভুল করা মানেই দুনিয়ার শেষ নয়।”
“মাস দুয়েক আগে তার আশপাশের মানুষগুলোকে একহাত নিয়েছিলাম আমি (অধৈর্য হয়ে ওঠায়)। এখন আমি তাকে ও তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি , কারণ তাকে নিয়ে ভালো কাজ করা হয়েছে।”
গিলের এখন এতটাই ভালো খেলছেন যে, বার্সেলোনার বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতেও তাকে শুরুর একাদশে রাখা হতে পারে বলে জানালেন কোচ।
“সে খেলতে পারে, এটা সত্যি। শুরুর একাদশে থাকার বিবেচনায় সে প্রবলভাবেই থাকবে। এটা নিয়ে কোনো সংশয় নেই।”
আগামী রোববার মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দল। লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে এই ম্যাচ। ৩৪ ম্যাচে ৭৯ পয়েন্ট বার্সেলোনার, রেয়ালের ৭৫।