ইংলিশ ফুটবল
ম্যাচের পর ম্যাচে কেভিন ডে ব্রুইনে সেরা একাদশে জায়গা না পাওয়ায় দলের ভেতর অন্যরকম কিছুর গন্ধ পাচ্ছিলেন সাবেক দুই ফুটবলার ও বিশ্লেষক গ্যারি নেভিল ও জেমি ক্যারাঘার।
Published : 04 Dec 2024, 10:08 AM
একগাদা ফুটবলারের চোট ও মাঠের ফুটবলে বাজে পারফরম্যান্সে এমনিতেই জেরবার ম্যানচেস্টার সিটি। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা। কেভিন ডে ব্রুইনের সঙ্গে নাকি মন-কষাকষি চলছে পেপ গুয়ার্দিওলার! ম্যানচেস্টার সিটির কোচ অবশ্য বেশ কড়া ভাষাতেই উড়িয়ে দিলেন এসব খবর।
এই বিতর্কের উৎস মূলত সিটির সেরা একাদশে ডে ব্রুইনের জায়গা না পাওয়া। চোট কাটিয়ে ফেরার পর পাঁচ ম্যাচে স্রেফ বদলি হিসেবে মাঠে নামানো হয়েছে সিটির অনেক সাফল্যের কারিগরকে। সবশেষ লিভারপুলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এই মিডফিল্ডারের মাঠে উপস্থিতি ছিল কেবল ১২ মিনিট।
সেরা একাদশে ডে ব্রুইনের সুযোগ না পাওয়াকে ‘অস্বাভাবিক, অদ্ভুত ও উদ্ভট’ উল্লেখ করে স্কাই স্পোর্টসের আলোচনায় গ্যারি নেভিল বলেন, ‘সিটির ড্রেসিং রুমে নিশ্চিতভাবেই কিছু একটা চলছে।’ তার সঙ্গে একমত হয়ে জেমি ক্যারাঘার বলেন, ‘ডে ব্রুইনের সঙ্গে কিছু একটা চলছে’ এবং ‘সে ফিট থাকার পরও দলে জায়গা না পাওয়া মানে কিছু ব্যাপার সেখানে ঠিকঠাক হচ্ছে না।”
তাদের সেসব কথারই জবাব দিলেন গুয়ার্দিওলা। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তাকে এই প্রসঙ্গে সরাসারি কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি। তবে তিনি নিজেই প্রসঙ্গটি তুললেন। সেখানে মিশে থাকল বিরক্তি আর হতাশা।
“লোকে বলাবলি করছে, কেভিনের সঙ্গে নাকি আমার ঝামেলা চলছে। আপনাদের কি মনে হয়, কেভিনকে খেলাতে পারলে আমার ভালো লাগবে না? নাহ, আমিই কেভিনকে খেলাতে চাই না। ফাইনাল থার্ডে সবচেয়ে প্রতিভাবান ছেলে যে, তাকে আমি খেলাতে চাই না। ৯ বছর একসঙ্গে থাকার পর তার সঙ্গে আমার সমস্যা হচ্ছে এখন…।”
ডে ব্রুইনেকে সেরা একাদশে রাখতে না পারার কারণটিও ব্যাখ্যা করলেন সিটির সফলতম কোচ।
“এই ক্লাবের সবচেয়ে বড় সাফল্য আমাকে উপহার দিয়েছে সে। তবে এটা বুঝতে হবে, সে চোটের কারণে পাঁচ মাস বাইরে ছিল, আবার দুই মাস বাইরে ছিল। তার বয়স ৩৩। নিজের সেরাটা খুঁজে পেতে তার সময় লাগবে। গত মৌসুমের মতো ধাপে ধাপে হবে। সে এভাবেই চেষ্টা করবে এবং সময়ের সঙ্গে ভালো অনুভব করবে। তাকে সেরা রূপে ফিরে পেতে আমি নিজেও মরিয়া।”
ডে ব্রুইনের বয়সের ব্যাপারটিও মনে করিয়ে দিলেন গুয়ার্দিওলা।
“সেরা সময়ের কেভিনকে ফিরে পেতে ভালো লাগবে আমার। যখন তার বয়স ছিল ২৬-২৭। সে নিজেও নিশ্চয়ই একইরকম চাইবে। তবে বাস্তবতা হলো, তার বয়স এখন আর ২৬-২৭ নয়। আগেও তার দীর্ঘ ও বাজে চোট হয়েছিল।”
“তার জায়গা ও শক্তি ফিরে পেতে শারীরিকভাবে আরও ফিট হয়ে উঠতে হবে তাকে। ১০-১১ মৌসুম ধরে খেলে আসছে সে, অনেক অনেক ম্যাচ খেলেছে। আমি জানি, আমাদেরকে সহায়তা করার জন্য সে মরিয়া হয় উঠেছে। এখনও এমন কিছু ঝলক সে দেখায়, যা কেবল সে-ই করতে পারে।”
ডে ব্রুইনেকে যেভাবে ‘ত্রাতা’ বা সব সমস্যার সমাধান হিসেবে দেখছেন অনেক, এখানেও আপত্তি আছে ম্যানচেস্টার সিটি কোচের। ভরসার সব ভার একজনের ওপর চাপিয়ে দিতে নারাজ তিনি।
“সবসময়ই বলে আসছি, সে এলেই আমাদের সমস্যার সমাধান হবে না। যেমন আর্লিং (হলান্ড) একা কোনো সমাধান করতে পারবে না। আমরা রক্ষণ সামলাই ও আক্রমণে যাই একসঙ্গেই। সেরা ফুটবলারদের ফিরে পেতে চাই আমি। আশা করি, ধাপে ধাপে আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে এবং সবার কাছ থেকেই সেরাটা আমরা পাব।”
সবশেষ সাত ম্যাচের ছয়টিতে পরাজিত ও একটিতে ড্র করা গুয়ার্দিওলার দল বুধবার প্রিমিয়ার লিগে খেলবে নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিপক্ষে।