ইউরোয় বেলজিয়ামের বর্ণহীনতায় চাপে তেদেসকো

বিবর্ণ পারফরম্যান্সে চার ম্যাচের তিনটিতে গোল করতে পারেনি বেলজিয়াম, বড় দায় পড়ছে কোচ দোমেনিকো তেদেসকোর ওপর।

সোনালী প্রজন্মের কয়েকজন এখন আর দলে নেই। তারপরও কেভিন ডে ব্রুইনে, রোমেলু লুকাকু, জেরেমি ডোকুদের উপস্থিতিতে এখনও বেশ সম্ভাবনাময় বেলজিয়াম। কিন্তু, বড় মঞ্চে আরও একবার ব্যর্থ দলটি। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে নকআউট পর্বের শুরুতেই দল ছিটকে পড়ায় সমালোচনার তীর ছুটছে কোচ দোমেনিকো তেদেসকোর দিকে।

ডুসেলডর্ফে সোমবার শেষ ষোলোর ম্যাচে নিরাপদ ফুটবলের পথে হাঁটে বেলজিয়াম। ফ্রান্সের বিপক্ষে গোলের জন্য পুরো ম্যাচে মাত্র ৫টি শট করে তারা। লক্ষ্যে থাকে ২টি। রক্ষণে অধিক মনোযোগ দিয়ে ৮৫তম মিনিটে আত্মঘাতী গোল খেয়ে হেরে বসে তারা।

গ্রুপ পর্বেও সন্তোষজনক ফুটবল খেলতে পারেনি বেলজিয়াম। স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে হার দিয়ে যাত্রা শুরুর পর রোমানিয়ার বিপক্ষে জেতে ২-০ গোলে। এরপর নকআউটের টিকেট নিশ্চিত করতে ইউক্রেইনের বিপক্ষে ঝুঁকি না নিয়ে ড্রয়ের জন্য খেলে তেদেসকোর দল।

তুলনামূলক সহজ গ্রুপেও তাই চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি ডে ব্রুইন-লুকাকুরা। গ্রুপ পর্বে দল নিষ্প্রাণ ফুটবল খেলায় সমর্থকদের তোপের মুখেও পড়েন বেলজিয়াম কোচ।

তবু ফ্রান্সের বিপক্ষে কৌশলে পরিবর্তন আসেনি তাদের। ক্লাব ফুটবলে ম্যানচেস্টার সিটির অনেক সাফল্যের নায়ক, মাঠে অধিকাংশ সময় আক্রমণ গড়ে দেওয়া ডে ব্রুইনেকে ফরাসিদের বিপক্ষে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে দেখা যায়।

হাতে গোনা যে কয়েকবার আক্রমণে উঠতে পারে বেলজিয়াম, তাতে ফ্রান্সের রক্ষণে যা একটু ভীতি ছড়াতে পারেন ডোকু। মাঝেমধ্যে নিজের জাত চেনাতে ভুল করেননি ডে ব্রুইনেও। কিন্তু কৌশলগত কারণেই সেগুলো ধার ছিল খুবই কম।

সব মিলিয়ে চার ম্যাচের তিনটিতেই গোল করতে ব্যর্থ বেলজিয়াম। তবু ২০২২ বিশ্বকাপ থেকে কিছুটা উন্নতির কথা তারা বলতেই পারে। কাতারের ওই আসরের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছিল দীর্ঘ দিন ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকা দলটি।

জার্মানিতে সবশেষ এই বিবর্ণ পারফরম্যান্সের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তেদেসকোর কৌশল নিয়ে। ভবিষ্যতেও তার দায়িত্বেই বেলজিয়াম দলকে রাখা হবে কিনা, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।

কাতার বিশ্বকাপ শেষে দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউরো শুরুর আগ পর্যন্ত তেদেসকোর কোচিংয়ে টানা ১৪ ম্যাচ অপরাজিত ছিল বেলজিয়াম। পরে তার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করে দেশটির ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু অজেয় পথচলা ইউরোতে ধরে রাখতে পারেনি তেদেসকোর দল।

তাছাড়া, তর্কযোগ্যভাবে বর্তমান ফুটবল বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়ার সঙ্গে বিবাদের বিষয়টিও তেদেসকোর বিরুদ্ধে যাচ্ছে, যে কারণে কর্তোয়াকে ছাড়াই ইউরো খেলেছে বেলজিয়াম।

সব মিলিয়ে তাই এখন প্রশ্নের মুখে বেলজিয়ামের ডাগআউটে তেদেসকোর ভবিষ্যৎ। দেশটির ফুটবল ফেডারেশন কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটিই দেখার।