গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির পাতা উল্টে পূবের আকাশে যে মুহূর্তে নতুন সূর্য উঁকি দেয়, সে মুহূর্তেই শুরু হয় এ উৎসব।
Published : 09 Mar 2024, 10:31 PM
রেস্তোরাঁ জুড়ে খাবারের সুঘ্রাণ, বাইরে তাকালে ব্যস্ত সড়কের সঙ্গে উঁচু দালান দেখা যায়। কিন্তু সেসবে ভ্রূক্ষেপ নেই শিশুদের দলটির।
তারা পাখি আর খাঁচার ছবি দিয়ে সৃষ্টি করল এক বিভ্রম, মনে হচ্ছিল পাখিটি খাঁচায় বন্দি। আবার শিশুরাই কাগজ কেটে আঠা দিয়ে তৈরি করল মহাকাশযান।
রাশিয়ান মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগারিনের ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর পান্থপথের ক্লাউড বিস্ত্রো রেস্তোরাঁয় এমন নানা আয়োজন দেখা গেল।
ঢাকায় রাশিয়ান হাউজ এবং বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন সমন্বিতভাবে ‘ইউরি নাইট’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
আয়োজকরা বলছেন, শিশুদের বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তুলতেই তাদের এ প্রয়াস। সেখানে উপস্থিত হতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিল শিশুরাও।
“আমার খুব ভালো লাগছে। বাসায় নানা কিছু বানাই, ছবি আঁকি,” বলছিল কলাবাগান থেকে আসা স্কলাস্টিকা স্কুলের শিক্ষার্থী দাইয়ান আহমেদ আমান ডিলান।
বাচ্চাদের কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর তাদের জাদু দেখান জাদুকর আরিফ আজগর। পরে শিশুদের হাতে সনদ তুলে দেন ঢাকায় রাশিয়ান হাউসের পরিচালক পাভেল দভয়চেনকভ এবং বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জিকরুল আহসান শাওন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
শাওন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটা প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাচ্চা যখন কিছু একটা তৈরি করে বাড়ি নিয়ে যায়, তখন তার মধ্যে যে আত্মবিশ্বাসটা তৈরি হয়- আমরা সেটাই তৈরি করতে চাই। তারা মনে করে, আমি পারি বা আমি পারব; এটাই সবচেয়ে বড়। এই উদ্দেশ্যেই প্রোগ্রামগুলো করা হয়।”
ইউরি গ্যাগারিনের জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে শিশুদের নিয়ে কেক কাটা হয়। তারপর ইউরি গ্যাগারিনের জীবন ও কর্মের উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার বৈমানিক ইউরি গ্যাগারিন মহাকাশ যান ভস্তক-১ এ চড়ে মহাশূন্যে যান। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবী থেকে প্রথমবারের মত কেউ মহাশূন্যে যায়। গ্যাগারিন ১০৮ মিনিট ধরে পৃথিবীর কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করেছিলেন।
১৯৯৯ সাল থেকে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ঘুরে স্থানীয় শিশুদের নিয়ে সূর্য উৎসবের আয়োজন শুরু করে। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির পাতা উল্টে পূবের আকাশে যে মুহূর্তে নতুন সূর্য উঁকি দেয়, সে মুহূর্তেই শুরু হয় এ উৎসব।
প্রতিবছর দেশীয় সংস্কৃতিতে এ উৎসব একবারই করা হয়। সেখানে বাচ্চাদের কাগজ দিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন জিনিস তৈরি করানো হয়।