অভিযোগপত্রে অস্ত্রের ধারা বাদ, নারাজি মেয়র আইভীর

অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১২ জনকে হত্যাচেষ্টার আসামি করা হয়; তবে অস্ত্র আইন থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
Published : 29 Jan 2023, 02:17 PM
Updated : 29 Jan 2023, 02:17 PM

নারায়ণগঞ্জে পাঁচ বছর আগের হকার উচ্ছেদ নিয়ে সংঘাতের একটি মামলায় আসামিদের অস্ত্র আইনের ধারা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় অভিযোগপত্রে নারাজি দিয়েছেন সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। 

সোমবার নারায়নগঞ্জের চতুর্থ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে এই নারাজি আবেদন দেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা জিএম সাত্তার। 

গত ২৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক আতাউর রহমান। 

মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, জখম, ভাঙচুর ও নাশকতার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানান তদন্ত কর্মকর্তা। তবে অস্ত্র আইনের ধারা থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তিনি। 

গত ৮ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে এ অভিযোগপত্রে ‘অসন্তুষ্ট’ সেলিনা হায়াৎ আইভী নারাজি দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। 

সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা জিএম সাত্তার বলেন, “রোববার মামলাটির নির্ধারিত তারিখ ছিল। আমরা আদালতে অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন জানাই। কী কারণে আমরা নারাজি জানিয়েছি সেই বক্তব্যও আদালতে পেশ করেছি। আদালত তখন আমাদের বক্তব্য শোনেন।” 

মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ১ মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। 

আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েলসহ আরও কয়েকজন। 

২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সংঘাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। 

এ ঘটনায় সিটি মেয়র নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিলে তা সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। 

২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফাহমিদা খাতুনের আদালত এজাহার গ্রহণ করে সেটিকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য সদর থানাকে নির্দেশ দেন। 

ঘটনার ২২ মাস পর আদালতের নির্দেশে এটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ। 

আইভীর পক্ষে মামলার বাদী হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা জি এম সাত্তার। ওই মামলায় নয় ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৯০০ থেকে ১০০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। 

অভিযোগপত্রে যাদের নাম এসেছে তারা হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম, যুবলীগ নেতা নিয়াজুল ইসলাম খান, হকার নেতা রহিম মুন্সি, আসাদুল ইসলাম ওরফে আসাদ, সায়মন, ইকবাল হোসেন, মাসুদ পাটোয়ারী ওরফে শুক্কুর, তোফাজ্জল, পলাশ মিয়া, মহসীন বেপারী, সালাউদ্দিন ওরফে সালাউদ্দিন গাজী ও সাদেকুল ইসলাম। 

আসামিরা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের সমর্থক বলে শহরে পরিচিতি রয়েছে। যে ১২ জনের নাম অভিযোগপত্রে এসেছে তার মধ্যে কেবল শাহ্ নিজাম ও নিয়াজুল ইসলাম খান এজাহারভুক্ত আসামি; বাকিরা এজাহারবহির্ভূত। একইসঙ্গে এজাহারভুক্ত নয় আসামির বাকি সাতজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছে পিবিআই।