আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে উপহার হিসেবে দেওয়া সেই গাড়ির ফিটনেস নেই। গাড়িটির ফিটনেসের মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় ১০ বছর আগে।
এ ছাড়া টয়োটা নোয়াহ ১৯৯৮ মডেলের গাড়িটির ট্যাক্সও সবশেষ দেওয়া হয়েছিল ২০১৩ সালে। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বলছে, গাড়ির ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস সনদ নিয়মিত নবায়ন না করায় প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মতো বকেয়া জমা হতে পারে।
মঙ্গলবার দুপুরে জাঁকজমক আয়োজনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে হিরো আলমকে নিজের নোহা গাড়ি উপহার হিসেবে তুলে দিলেন হবিগেঞ্জর শিক্ষক এম মুখলিছুর রহমান। চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি গ্রামের বাসিন্দা মুখলিছুর স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রিন্সিপাল।
এদিন গাড়ি আনতে যাওয়ার সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর দায়ে মামলা খান হিরো আলম; পরে তিনি আড়াই হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে পার পান।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে হিরো আলম বলেন, গাড়িটি নেওয়ার আগে গাড়ির ফিটনেসের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া এবং বিআরটিএর বকেয়া পাওনার বিষয়ে তিনি জানতেন না। পরে গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করতে গিয়ে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন।
তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।”
এ বিষয়ে শিক্ষক মুখলিছুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে তিনি পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে গাড়িটি কিনেছিলেন। এর পর থেকে তিনি গাড়িটি ব্যবহার করে আসছেন। ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই ফিটনেস সনদের মেয়াদ শেষ হয় গাড়িটির। তিনি মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেসেই গাড়িটি ক্রয় করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, এই গাড়ি নিয়ে চলাচলে তার কখনও কোনো সমস্যা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমাকে অনেকেই ফোন দিয়েছেন। ২০১৩ সাল থেকে ওই গাড়ির ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস সনদ নবায়ন নেই। সেই হিসেবে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মতো বকেয়া হতে পারে।”
বগুড়ার কেবল অপারেটর আশরাফুল আলম নিজের মতো করে গান গেয়ে ও মিউজিক ভিডিও তৈরি করে সোশাল মিডিয়ায় তুলে দেশ এবং দেশের বাইরেও এখন ‘হিরো আলম’ নামে পরিচিত।
তিনি রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন। তারপর পুলিশ তাকে ডেকে নিয়ে সতর্ক করে। তা নিয়েও সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।
হিরো আলম ২০১৮ সালে তিনি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচন করে জামানত হারিয়েছিলেন। এবার ‘ভোটারদের চাওয়ার মুখে’ সেই আসনের পাশাপাশি বগুড়া-৬ (সদর)আসনেও উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হন।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা ফিরে না পেয়ে উচ্চ আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি। পরে একতারা নিয়ে ভোটের মাঠে নামেন।
হিরো আলম বগুড়া-৪ আসনে আওয়ামী জাসদ প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন এবং বগুড়া-৬ আসনে আওয়ামী লীগের রাগেবুল আহসান রিপুর কাছে হেরে যান।
এই উপ-নির্বাচনের আগের দিন ফেসবুক লাইভে হিরো আলমকে গাড়ি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন হবিগেঞ্জের শিক্ষক এম মুখলিছুর রহমান।
এর পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় নানান আলোচনা ও সমালোচনা।