‘ঐতিহ্যগত বিদ্যা সংরক্ষণ ও বিকাশ: আদিবাসী নারী সমাজের ভূমিকা’- এই স্লোগানে রাঙামাটিতে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন।
Published : 09 Aug 2022, 06:19 PM
পাহাড়িদের অধিকার আদায়ের জন্য মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, “জেএসএস স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব স্বীকার করেই শান্তি চুক্তি করেছে। আমাদের আশা ছিল চুক্তির বাস্তবায়ন হবে, সবাই মিলে মিশে থাকবো। এখন পাহাড়ে হচ্ছেটা কী? ঘরে বসে থাকলে অধিকার কেউ দিয়ে যাবে না।”
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপনে মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি শহরের পৌর চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
‘ঐতিহ্যগত বিদ্যা সংরক্ষণ ও বিকাশ: আদিবাসী নারী সমাজের ভূমিকা’ এই স্লোগানে রাঙামাটিতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে উদযাপন কমিটি।
সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘আগের মতো রাতের অন্ধকারে চুপিসারে ভোট দেওয়া যাবে না। নির্বাচন হতে হবে স্বচ্ছতার সাথে ও গ্রহণযোগ্য। এখনও সময় আছে ভালো হয়ে যান, সবাই একসাথে দেশকে গড়ে তুলবো।’
তিনি বলেন, “একটি জাতিকে ধ্বংস করতে হলে যুবসমাজকে ধ্বংস করলেই সম্ভব। মদ, জুয়ায় আসক্ত হয়ে গ্রাম ও শহরের যুবসমাজ আজ ধ্বংসের পথে। এই পথ থেকে তাদেরকে ফিরে আসতে হবে।”
পাহাড়ের এই নেতা বলেন, “সামনে কঠিন লড়াই-সংগ্রাম রয়েছে। অধিকার আদায়ের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হবে। পাহাড়ে মানুষ ভয়-ভীতি নিয়ে বসবাস করছে।”
ভূমিহীন ও ঘরবাড়ি ছাড়া হওয়ার কারণে দুর্গম এলাকার মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ও বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মাধবীলতা চাকমা। আরও বক্তব্য দেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা।
সভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৩টি নৃ-গোষ্ঠীর বাস। প্রকৃতির সাথে মিশে থাকা পাহাড়ের এসব মানুষ নিজেদের পরিচয় নিয়ে এ দেশে বেঁচে থাকতে চান। সরকার বা অন্য কারো চাপিয়ে দেওয়া নামে নয়। নিজেদের যে সঠিক পরিচয়, তার স্বীকৃতি চান। সেই সাথে ‘আদিবাসী’ সম্বোধন না করার সরকারি প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবি করে বক্তারা বলেন, নিজস্ব সত্তা, পরিচয়, ঐতিহ্য ও ভাষা রয়েছে। ফলে ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি পাওয়ার অধিকারও রয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর শেষে নিজেদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বা উপজাতি হিসেবে পরিচয় দিতে চান না তারা।
আলোচনা সভা শেষে পৌর চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শিল্পকলা একাডেমির সামনে গিয়ে শেষ হয়।