কৌশলের রাজনীতি অবশ্যই হবে কিন্তু অপকৌশল কখনো কৌশলের রাজনীতি হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন রানা দাসগুপ্ত।
Published : 16 Jun 2023, 11:28 PM
জামায়াতে ইসলামীকে সভা করার অনুমতি দেওয়াকে সরকারের অপকৌশল বলে মনে করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।
শুক্রবার ময়মনসিংহে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় তিনি বর্তমান আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেন।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে উল্লেখ করা সাত দফা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রানা দাসগুপ্ত বলেন, ইতিমধ্যে সংখ্যালঘুরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তারা ক্ষুব্ধ হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আগামী সংসদ নির্বাচনে অতীতের ভূমিকা পালন করা সম্ভব হবে কিনা সেটি আমাদের ভেবে দেখতে হবে।
“আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না করে শুধু লজেন্স খাইয়ে আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আমাদেরকে আর আটকানো যাবে না। আমরা কারো কাছে মাথা নত করব না। কোনো ভয়ভীতি, হুমকি ও চক্রান্তের কাছে অতীতেও যেমন মাথা নত করি নাই ভবিষ্যতেও করব না।”
সম্প্রতি প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে সভা করেছে।
এই সভার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গি দিয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, আজকে সরকার একদিকে হেফাজতে ইসলামের সাথে আঁতাত করে পাঠ্য পুস্তকের সাম্প্রদায়িকতা ঢুকিয়েছে, অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে সরকারের অনুমতি নিয়েই জামায়াত ইসলামী মাঠে নেমেছে।
“তাদের ভাষায় এগুলো হচ্ছে রাজনীতির জন্য, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য – এটি একটি কৌশল। আমরা বলতে চাই, কৌশলের রাজনীতি অবশ্যই হবে, কিন্তু অপকৌশল কখনো কৌশলের রাজনীতি হতে পারে না।“
রানা দাশগুপ্ত বলেন, এই কৌশলের রাজনীতি করতে গিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িকতা পাকিস্তান আমলের চাইতেও দশ গুণ বেড়ে গেছে। এখন সরকারি দলে সাম্প্রদায়িকতা, প্রশাসনে সাম্প্রদায়িকতা, ঘরে ঘরে সাম্প্রদায়িকতা।
“এর মধ্যে আমরা উপলব্ধি করতে পারি না প্রকৃত অর্থে আমাদের নির্ভর করার রাজনৈতিক দল কোনটি।
“স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এসে এই কথাগুলো আজ দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, সেই স্বপ্ন আজ ভেঙে খানখান হয়ে গেছে। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের পথেই এগোচ্ছে। কিন্তু এর জন্য তো আমরা মুক্তিযুদ্ধ করি নাই।”
সংগঠনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি বিকাশ রায়ের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুজিত বর্মন ও মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক পবিত্র রঞ্জন রায়ের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মিলন কান্তি দত্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক দীপংকর ঘোষ, শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক তপু গোপাল ঘোষ এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক শংকর সাহা।
স্বাগত বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সভাপতি প্রশান্ত কুমার দাস চন্দন।