পুলিশের ভাষ্য, গ্রেপ্তাররা আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য; তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
Published : 15 Apr 2023, 08:37 PM
গাজীপুর সদরে ডিবি পরিচয়ে একটি ব্যাটারি করাখানায় ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ইব্রাহিম খান।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে গাজীপুর, ঢাকার কেরাণীগঞ্জ ও সাভার, মানিকগঞ্জ এবং টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশের ভাষ্য, গ্রেপ্তাররা আন্ত:জেলা ডাকাতদলের সদস্য।
গ্রেপ্তাররা হলেন- বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ঘরফতিপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম সোহান (৩০), জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পোলাকান্দি গ্রামের মমিনুল ইসলাম রূপচান (৩৫), টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার পঁচিশমাইল গ্রামের বিল্লাল হোসেন নজরুল (৪০), রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফুটলক্ষ্মীপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৩২), মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কুলাপাড়া গ্রামের রুবেল (২৯), একই উপজেলার কুলাপাড়া গ্রামের জাকির হোসেন (৪২) এবং ঢাকার ধামরাই উপজেলার বাংলা গ্রামের মিজানুর রহমান (৫৭)।
গ্রেপ্তাররা গাজীপুর ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন।
উপ-কমিশনার ইব্রাহিম খান বলেন, “ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একদল লোক গত ৬ এপ্রিল সন্ধ্যার পর গাজীপুর মহানগরের দেশিপাড়া এলাকার জ্যাক ব্যাটারির গোডাউনে প্রবেশের চেষ্টা করে।
“কারখানায় হত্যা মামলার আসামি রয়েছে, এমনটা বলে কর্মচারীদের গেইট খুলতে বলে। গেইট খুলতে দেরি হওয়ায় ডাকাতরা কৌশলে নিচের ছিটকানি খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন।”
তিনি আরও বলেন, “আসামি শনাক্তের কথা বলে ডাকাতরা কর্মচারীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে এক এক করে প্রত্যেকে দোতলার ঘরে নিয়ে হাত-পা-মুখ বেঁধে মারধর করেন তারা।
“পরে গোডাউনে ট্রাক ঢুকিয়ে ১৩৯টি ব্যাটারি, ৩ লাখ টাকা, কর্মচারীদের ১৪টি মোবাইল ফোন, সিসিটিভি ক্যামেরার একটি ডিভিআরসহ ১৮ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় তারা।”
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়দের আসামি করে মামলা করা হলে ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে পুলিশ।
তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে শুক্রবার বিকাল ৩৬ ডাকাতি মামলার আসামি মিজানুরকে টঙ্গী কলেজ গেইট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
উপ-কমিশনার ইব্রাহিম বলেন, “গ্রেপ্তার মিজানুরকে নিয়ে পুলিশ ছদ্মবেশে রাজেন্দ্রপুরের গাজীর মার্কেটগামী সড়কের পাশে অবস্থান নেয়। এ সময় একদল ডাকাত সেখানে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
“তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও আরও সাত থেকে আটজন পালিয়ে যায়।”
লুট করা ব্যাটারিগুলো রাজধানীর বংশাল থানার বাবুবাজার এবং কেরাণীগঞ্জে বিক্রি করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন তারা। পরে গ্রেপ্তার সোহানকে নিয়ে কেরাণীগঞ্জের কান্দুলী এলাকার গোডাউন মালিক সুমনের কারখানা থেকে ১০৩টি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয় বলে উপ-কমিশনার জানান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উৎপল কুমার জানান, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি ট্রাক, ডিবি পুলিশের একটি জ্যাকেট, একটি খেলনা পিস্তল, মেট্রোপলিটন পুলিশের পোশাক, পিটি সু, টুপি ও বেল্টসহ ছয়টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর ডাকাতদলের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে উৎপল কুমার জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অপরাধ) ও রেজওয়ান আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।