১০৭ শতাংশ জমি দখলমুক্ত হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনসহ সংবাদ কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কৃষক মিলন মিয়া।
Published : 05 Mar 2024, 08:05 PM
নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় তিন ফসলি কৃষিজমিতে জোর করে বালু ফেলে আড়ত তৈরির চেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ ডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের কৃষিজমি পরিদর্শন করে বালুর আড়তটি বন্ধ করে দেন।
ইউএনও বলেন, “কৃষক মিলন মিয়ার কৃষিজমি জোরপূর্বক দখল করে বালু ফেলার জন্য আড়ত গড়ে তোলা হয়েছে। আপাতত আড়তটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই কৃষিজমিতে জোরপূর্বক যেন কেউ বালু না ফেলতে পারে, সেজন্য ডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
১০৭ শতাংশ জমি দখলমুক্ত হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনসহ সংবাদ কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কৃষক মিলন মিয়া বলেন, “স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা জসীম রানা দলবল নিয়ে জমিতে বালু ফেলার জন্য আড়ত করেছিল। এই জমিটুকুই শেষ সম্বল। সবার চেষ্টায় জমিটা দখলমুক্ত হয়েছে।”
রোববার ‘কৃষিজমিতে বালু ভরাটের চেষ্টার অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে’ শিরোনামে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরই বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার টাওড়া গ্রামের বাসিন্দা মিলন মিয়ার অভিযোগ ছিল, পলাশের ডাঙ্গা ইউনিয়নে ডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে তার ১০৭ শতাংশ কৃষিজমিতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বালু ফেলে রেখেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জসীম রানা। এ ব্যাপারে অভিযোগ দিয়েও তিনি কোনো প্রতিকার পাননি।
কৃষিজমিতে বালু ভরাটের চেষ্টার অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে
রোববার সরজমিনে দেখা গেছে, ডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ওই কৃষকের জমির চারদিকে ভ্যাকু মেশিনে মাটি তুলে পাড় বেঁধে বালু ফেলার (বালুর আড়ত) জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শীতলক্ষ্যা নদী থেকে বালু এনে এই আড়তে রাখার জন্য পাইপও লাগানো হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগ নেতা জসীম রানা বলেছিলেন, “পাঁচদোনা-ডাঙ্গা চার লেইন প্রকল্পের সড়ক নির্মাণে এখান থেকে বালু নেওয়া হবে। এটি সরকারের একটি উন্নয়নমূলক কাজ। কাজটি ঢাকার একটি কোম্পানি পেয়েছে।
“আমি তাদের প্রতিনিধি হয়ে এখান থেকে কৃষকদের জমি ভাড়া নিয়ে বালুর আড়ত গড়ে তুলেছি। মিলন মিয়ার কাছ থেকেও তার জমি ভাড়া নিতে গিয়েছি। কিন্তু মিলন মিয়া জমি ভাড়া দিচ্ছেন না।”
আওয়ামী লীগ নেতা আরও বলেন, “সম্ভবত মিলন মিয়ার ৫৭ শতাংশ জমিও আমাদের বালুর আড়তের ভিতরে পড়েছে। এ ছাড়া সব জমিই কৃষকদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হয়েছে।”