জিরাফ মৃত্যুর বিষয়ে পার্ক কর্তৃপক্ষ গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে বলে ওই থানার ওসি জানান।
Published : 04 Nov 2023, 09:23 PM
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে একটি জিরাফের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২০ অক্টোবর জিরাফটির মৃত্যু হলেও শনিবার দুপুরে বিষয়টি প্রকাশ পায়।
জিরাফ মৃত্যুর বিষয়ে পার্ক কর্তৃপক্ষ গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে বলে ওই থানার ওসি এ এফ এম নাসিম জানান।
ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, মারা যাওয়ার পর জিরাফের ময়নাতদন্ত করেছে ৬ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই ওই বোর্ডের অধীনে জিরাফটির চিকিৎসা চলছিল।
জিরাফের মরদেহটি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাফারি পার্কের ভেতরে নির্দিষ্ট এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়।
শারমিন আক্তার আরও বলেন, মারা যাওয়া জিরাফটি ২০২১ সাল থেকে অসুস্থ ছিল। ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে এর জরায়ুতে পচন ধরে। পরে তা শরীরের পেছনের অংশে বিস্তার লাভ করে। অসুস্থ অবস্থায় এটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। নিরাপত্তার জন্য আক্রান্ত জিরাফটিকে আলাদা জায়গায় রাখা হয়েছিল।
মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাফারি পার্কে সবশেষ তিনটি মাদি জিরাফ ছিল। কোনো পুরুষ জিরাফ না থাকায় মেটিং (প্রজনন) হচ্ছিল না। পরিণত এবং মেটিংয়ে ব্যর্থ একটি জিরাফের জরায়ুতে পচন ধরে, যা পরে ক্যানসারে রূপ নেয়।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, “যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বোর্ড ময়নাতদন্ত করে জিরাফের মরদেহ মাটি চাপা দেয়। এ ছাড়া মরদেহের বিভিন্ন অংশের নমুনা ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, “বিকল্প মেটিংয়ের জন্য ঢাকা চিড়িয়াখানায় যে পুরুষ জিরাফ রয়েছে সেটিও টিবি রোগে আক্রান্ত, যে কারণে সেটি এনেও প্রজনন করা ঠিক হবে না।
“এটি খুব রিস্ক হয়ে যাবে। নতুন পুরুষ জিরাফ ক্রয় করা ছাড়া সাফারি পার্কে জিরাফ প্রজনন করা সম্ভব নয়। কিন্তু বর্তমানে জিরাফ ক্রয়ের বাজেট না থাকায় তা কেনাও সম্ভব হচ্ছে না। নতুন করে বাজেট দিয়ে এটি কিনতে হবে।”
পার্ক সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৩ সালে পার্ক প্রতিষ্ঠাকালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুই দফায় মোট ১০টি জিরাফ আনা হয়। আন্তর্জাতিক প্রাণী বিপণন প্রতিষ্ঠান ফ্যালকন ট্রেডার্সের মাধ্যমে এগুলো আমদানি করে কর্তৃপক্ষ। এর পর ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আরো চারটি জিরাফ বাচ্চা দেয়।
যদিও ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে রোগাক্রান্ত হয়ে বেশকিছু জিরাফ মারা যায়। সবশেষ পার্কে মাত্র তিনটি স্ত্রী জিরাফ টিকে ছিল।
একটির মৃত্যুতে পার্কে আর দুটি মাদি জিরাফ অবশিষ্ট আছে।
বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, নতুন করে পার্কে আরো প্রাণী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাব পাস হলে পার্ক আরো সমৃদ্ধ হবে।