এ ঘটনায় বুধবার হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়ার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী।
Published : 23 Mar 2024, 10:12 PM
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ অমর চাঁদ দাসকে নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
শনিবার বিকাল ৩টায় নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধনে নির্যাতনকারী চিকিৎসক ও নার্সদের কঠোর শাস্তি দাবি জানান সিলেটের নেতারা।
গত ১৩ মার্চ হার্নিয়া অপারেশনের জন্য ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অমর চাঁদ দাস। ১৭ মার্চ প্রস্রাবের যন্ত্রণায় তিনি কাতরাতে কাতরাতে ক্ষোভ জানালে তাকে চিকিৎসকের কক্ষে নিয়ে মারধর ও হুমকি ধমকি করেন দেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।
এ ঘটনায় বুধবার হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়ার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী।
অমর চাঁদ দাস (৭৯) সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার শ্যামারচর গ্রামের বাসিন্দা।
ওই রোগী চিকিৎসকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন দাবি করে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক নারী চিকিৎসকও।
অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে ওই রোগী (অমর চাঁদ) কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন।”
এদিকে, অমর চাঁদকে নির্যাতনের অভিযোগে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৬ মার্চ সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার সমারচর গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কমরেড অমর চাঁদ দাস হানিয়া অপারেশনের জন্য এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন তার অপারেশনের পর রাতে ক্যাথেটার লাগানো অবস্থায় প্রস্রাবে সমস্যা দেখা দিলে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন। এ অবস্থায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স যথাযথ ব্যবস্থা না করে অন্য একজন ডাক্তার ও পুলিশ দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে পাঠায়।
বক্তারা আরও অভিযোগ বলেন, পুলিশ ওই রোগীর করুন অবস্থা দেখে গ্রেপ্তার না করে ফিরে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর একদল চিকিৎসক নামধারী যুবক তাকে রুম থেকে তুলে বাহিরে নিয়ে এসে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। তার চিৎকার শুনে পাশের লোকজন এসে তাকে রক্ষা করে। কমরেড অমর চাঁদ দাস ইতোমধ্যে ২০১০ সালে এম এ জি উসমানী মেডিকেল কলেজে চক্ষু দান ও ২০১৪ সালে তার নিজ দেহ দান করে রেখেছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা, জঘন্য, বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মিহির রঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়ার পরিচালনায় বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদুল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন, সাংবাদিক আল-আজাদ, গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য আরিফ মিয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সিলেট জেলা সভাপতি সিকান্দর আলী, বাসদ মার্কসবাদী জেলা সভাপতি উজ্জ্বল দে, বাসদ জেলা সমন্বয়কারী জাফর আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অমর চাঁদ দাস, মহানগর জাসদের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, হিউমেন ওয়াচ ট্রাস্ট বাংলাদেশ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খান, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল আহমদ, মহানগর শাখার সভাপতি মির্জা রেজওয়ান বেগ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সহসভাপতি খালেদ হোসেন, অধ্যক্ষ প্রাণকান্ত দাস, গণতন্ত্র পার্টির মহানগরের সাধারণ সম্পাদক জুনেদুর রহমান চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক টিপু চৌধুরী, সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন জিলন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কমরেড অমর চাঁদ দাসের নাতিন কৌশা রানী তালুকদার, অপূর্ব দাস, কলেজ শিক্ষক পরিষদ সভাপতি জ্যোতিষ মজুমদার, পীযুষ কান্তি তালুকদার, সুভাষ কান্তি দাস, চারু সামন্ত, গুলজার আহমদ, আবর মিয়া পির, পীযুষ কান্তি তালুকদার।
আরও পড়ুন:
হাসপাতালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠককে মারধরের প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন