সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে পাঁচ স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার সকালে জালালাবাদ গ্যাস অডিটোরিয়ামে ১১ জন মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের।
এ সময় ভোটারদের তথ্যে ভুল, সম্পদের হিসাবে গড়মিল ও আয়কর রিটার্নজনিত সমস্যার কারণে প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মনোনয়নপত্র বাতিলকৃতরা হলেন- শামসুন নুর তালুকদার, মো. আব্দুল মান্নান খান, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন, শাহজাহান মিয়া, মুস্তফা আহমেদ রউফ মোস্তফা।
তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানান মনোনয়ন বাতিল হওয়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা।
তাদের একজন মুস্তফা আহমেদ রউফ মোস্তফা বলেন, “আমি একজন প্রবাসী। এক সপ্তাহ আগে দেশে এসেছি। তাই আয়কর দেওয়ার সুযোগই ছিলো না। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবো।”
অন্যদিকে মনোনয়ন বৈধ হওয়া প্রার্থীরা হলেন- মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল), হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) ও মো. জহিরুল আলম (জাকের পার্টি), মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (স্বতন্ত্র) , মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (স্বতন্ত্র)।
মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা পর জয়ের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন প্রার্থীরা।
কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “আমরা একটি প্রতিন্দ্বন্দ্বীতাপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশা করছি। যারা নির্বাচন ভয় পায় তারাই ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। গাজীপুরের নির্বাচনে ইভিএমের স্বচ্ছতা প্রমাণিত হবে।”
আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ সঠিক নয়।
তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছন অন্য প্রার্থীরা।
জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সরকারি দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। আমরা দাবি জানাই নির্বাচনের শেষ দিন পর্যন্ত তারা যেনো নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন।”
ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, “নির্বাচন কমিশন মূলত মুরুব্বিদের ভূমিকা পালন করেন আমরা সেই প্রত্যাশা করি। জনগণ যদি সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে না পারে তাহলে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা মেনে নিবে না।”
এসময় তিনি ইভিএম বাতিল করে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের দাবি জানান।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফয়সল কাদির জানান, “যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তারা আগামী তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।”
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এই সিটিতে ভোট হবে ২১ জুন। তার আগে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১ জুন।
৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন।
এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ ও নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন। মোট কেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৪টি।
২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত চারবার নির্বাচন হয়েছে। ২০০৩ সালে প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী বদর উদ্দিন কামরান, ২০০৮ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনেও কারাগার থেকে মেয়র নির্বাচিত হন।
২০১৩ সাল থেকে মেয়র পদে আছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। তবে এবার তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না।