ভোলায় বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে দুই কলেজছাত্রীসহ ৩ জন নিহত

ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের বাংলাবাজারের দক্ষিণ পাশে ওতরুদ্দিন নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 March 2023, 05:05 AM
Updated : 17 March 2023, 05:05 AM

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় একটি বাস ও দুইটি অটোরিকশার মধ্যে সংঘর্ষে দুই কলেজছাত্রীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। 

শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের বাংলাবাজারের দক্ষিণ পাশে ওতরুদ্দিন নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন বোরহানউদ্দিন থানার এসআই মো. মনজুর রহমান।

নিহতরা হলেন- দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কয়সর মাতাব্বরের মেয়ে রিমা (১৭), একই বাড়ির জাহাঙ্গীরের মেয়ে শিখা (১৭) ও একই এলাকার বাসিন্দা মো. কালাম (৫৫)।

নিহত রিমা ও শিখা দৌলতখান উপজেলার হালিমা খাতুন মহিলা কলেজের দ্বাদশ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

অটোরিকশার চালক মো. আবদুল কাদেরও মারা গেছেন বলে পুলিশ ও তার স্বজনরা জানিয়েছিলেন। পরে জানা যায় তিনি জীবিত রয়েছেন। তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

এসআই মো. মনজুর জানান, চরফ্যাশন থেকে ভোলাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ওতরুদ্দিন এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দুইটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়। 

ভোলা ও দৌলতখান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নেয় বলে জানান এসআই মনজুর। 

বোরহানউদ্দিন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রেজাউল আলম বলেন, “শ্যামলী সার্ভিসের বাসটির চালক আলামিনকে চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।” 

দুর্ঘটনা কবলিত বাসটিও আটক করা হয়েছে বলে জানান বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মনির হোসেন।

পরিবার ভেবেছিল ‘মারা গেছেন’ কাদের 

এ দিকে দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত অটোরিকশাটির চালক কাদের (৩৫) বরিশাল শেবাচিমে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। 

শুক্রবার রাতে কাদেরের শ্যালক মো. মাইনুদ্দিন জানান, দুর্ঘটনায় তার দুলাভাইয়ের মাথা ফেটে গেছে। মাথায় ১৪টি সেলাই লেগেছে। তার কোমর, মুখমণ্ডল ও হাতপা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। 

কাদের দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের উত্তর জয়নগর গ্রামের তালতলি মিঝি বাড়ির সিরাজ মিঝির ছেলে ও তিন সন্তানের জনক। 

মাইনুদ্দিন জানান, দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা কাদেরকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে বাংলাবাজারে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। তখন সেই চিকিৎসক মৃত ভেবে ‘কাদেরকে বাড়িতে নিয়ে’ যেতে বলেন। 

কিন্তু তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর তার দেহ নড়াচড়া করতে দেখা যায়। তাৎক্ষণিক তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে দ্রুত বরিশাল শেরে-বাংলা (শেবাচিম) মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। 

মাইনুদ্দিন বলেন, “ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট থেকে স্পিডবোটে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পথে তার সমস্ত শরীর শক্ত হয়ে যায়। তখন আমরা ভেবেছিলাম দুলাভাই মারা গেছে। তখন অনেকেই আমাদেরকে কল দিয়েছে। যারা কল দিয়েছে তাদেরকে আমরা তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানাই।” 

“কিন্তু আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছে, তিনি এখনো বেঁচে আছে। শ্বাসকষ্ট হওয়ায় তার শরীর শক্ত হয়ে গেছে। এরপর দুলাভাইকে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি বেঁচে আছেন বলে জানান চিকিৎসক।” 

হাসপাতালে চিকিৎসায় বিকাল ৫টার দিকে তার জ্ঞান ফিরে আসলেও এখনো তিনি কথা বলতে পারছেন না বলে জানান মাইনুদ্দিন।