নারায়ণগঞ্জে র‌্যাবের ‘বন্দুকযুদ্ধে ২৩ মামলার আসামি’ নিহত

রূপগঞ্জের চনপাড়ার বালুর মাঠে বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Nov 2022, 06:37 PM
Updated : 10 Nov 2022, 06:37 PM

নারায়ণগঞ্জে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক যুবক নিহত হয়েছেন, যার বিরুদ্ধে প্রায় দুই ডজন মামলা রয়েছে বলে এই বাহিনীর কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে রূপগঞ্জের চনপাড়ার বালুরমাঠে তিনি গুলিবিদ্ধ হন; বিকাল সাড়ে ৪টার রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

নিহত শাহীন মিয়া ওরফে সিটি শাহীন (৩৫) চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত মজিবুর রহমানের ছেলে।

‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে র‌্যাব ও এর সাবেক প্রধানসহ সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রায় এক বছর পর বন্দুকযুদ্ধের এই ঘটনা ঘটল।

আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, শাহীন মিয়া ওরফে সিটি শাহীন হত্যা, ডাকাতি ও মাদকসহ ২৩টি মামলার আসামি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী’ ছিলেন।

তাকে এর আগেও গ্রেপ্তার করতে গিয়ে র‌্যাব-১ এর একটি দল ব্যর্থ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রূপগঞ্জের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে অভিযান চালায় র‌্যাব। চনপাড়ায় একদিক দিয়ে ঢুকতে গেলে অন্যদিক দিয়ে পালিয়ে যায়। এই কারণে আমরা এইবার বিকল্প রুট ধরে চনপাড়ায় ঢুকি। কিন্তু কোনোভাবে তারা খবর পেয়ে যায়।

“র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সিটি শাহীন তার বাহিনী নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে শটগান ও পিস্তল দিয়ে গুলি চালায়। একই সঙ্গে ইট-পাটকেলও ছুড়তে থাকে। র‌্যাব পাল্টা শটগানের গুলি ছুড়লে সিটি শাহীনের পায়ে বিদ্ধ হয়।”

মোমেন বলেন, শাহীন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার সহযোগীরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাড়ে ৪টার দিকে মৃত্যু হয় শাহীনের।

‘সন্ত্রাসী বাহিনীর’ ছোড়া ইট-পাটকেলে র‌্যাবের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

এই ঘটনায় একাধিক মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও তিনি জানান।

এদিকে শাহীন মিয়ার শ্যালক মো. পারভেজ দাবি করেছেন, র‌্যাব দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চনপাড়ায় অভিযান চালায়, সেখান থেকেই শাহীনকে ‘আটক করে’ নিয়ে যায়। “পরে তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে প্রথমে আমরা ডেমরার ওইদিকে যাই। সেখান থেকে জানতে পারি, ঢাকা মেডিকেলে নিয়া গেছে। সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও যাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, র‌্যাব লাশ নিয়ে আসছিল, আবার নিয়ে গেছে। আমরা এর বাইরে কোনো খবর পাইনি।”

পারভেজের দাবির বিষয়ে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক মোমেন বলেন- এটা মিথ্যা; শাহীন চনপাড়াতেই গুলিব্দ্ধি হয়েছে।

২০০৪ সালে গঠিত র‌্যাবের বিরুদ্ধে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার’ অভিযোগ অনেক পুরনো। সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময়ে কঠোর সমালোচনাও করেছে।

এর ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১১ ডিসেম্বর এ বাহিনী, এর সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদসহ সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।

আরও পড়ুন:

Also Read: র‌্যাব ও সাবেক-বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা