সোমবার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা থেকে বিজিবি মহিষগুলো জব্দ করে।
Published : 01 Aug 2023, 10:12 PM
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় বিজিবির জব্দ করা ‘ভারতীয়’ ৩০টি মহিষের নিলাম কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক জাকির হোসেন এ নির্দেশ দেন বলে জানান বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ খালেদ আহমেদ।
তিনি বলেন, “মহিষগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন কিনা এবং এগুলো জব্দ করার ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বিজিবি-৫৫ ব্যাটালিয়ন কমান্ডারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
মঙ্গলবার আদালতে মালিক ও পাইকার বেলাল মিয়া এসব মহিষ কেনার রশিদ এবং রশিদের মূল বই উপস্থাপন করেন।
তিনি আদালতকে জানান, ২৭ জুলাই সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজার থেকে ৩০টি মহিষ কিনেছিলেন। ৩১ জুলাই মহিষগুলো বিক্রির জন্য রাজশাহীতে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
সেদিন বেলা ১২ টার দিকে পথে মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর এলাকায় বিজিবির একটি দল তাদের গাড়ি থামায়। এসব বিজিবি সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, এসব মহিষ চোরাই পথে ভারত থেকে আনা হয়েছে।
সঙ্গে থাকা কাগজপত্র বিজিবি সদস্যদের দেখালে তারা সেগুলো ছিঁড়ে ফেলে দেন বলে অভিযোগ করেন বেলাল মিয়া।
তিনি বলেন, “এরপর আমাদের চা বাগানে নিয়ে ছবি তুলে হবিগঞ্জে বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর মহিষগুলো রেখে আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আটকের তিন ঘণ্টা পর ওইদিন বিকালেই হবিগঞ্জের কাস্টম বিভাগের মাধ্যমে মহিষগুলো নিলাম তোলার চেষ্টা করা হয়।”
বাল্লা স্থলবন্দরের সহকারী কাস্টমস অফিসার আব্দুল বাতেন বলেন, “দুইজন বিজিবি সদস্যসহ পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি নিলাম কমিটির মাধ্যমে এই নিলাম ডাকা হয়। নিলামে এক লাখ টাকা করে জামানত জমা দিয়ে ২৫ নিলামকারী অংশগ্রহণ করেন।”
তিনি বলেন, “নিলামে সর্বোচ্চ ১৭ লাখ টাকা ডাক হয়। কিন্তু এই দাম কমিটির মনমতো না হওয়ায় নিলামটি স্থগিত করা হয়। পরদিন বেলা ৩টায় পুনরায় নিলাম ডাক দেওয়া হবে বলে নিলামকারীদের জামানতের টাকা ফেরত দেওয়া হয়।”
কোন নিয়মে এই নিলাম ডাকা হয়েছে আদালত তা জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, “এ ব্যাপারে বিজিবি কোনো কাগজপত্র দাখিল করেনি। টেন্ডার হলে কাগজপত্র দাখিল করা হবে বলে তারা জানিয়েছিল।”
এসময় সুনামগঞ্জের বোগলাবাজারের ইজারাদার রফিক খানও আদালতকে জানান যে, জব্দ করা মহিষগুলো বেলাল মিয়া ও তার লোকজন বোগলাবাজার থেকেই কিনেছেন।
তবে বিজিবি ৫৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল ইমদাদে বলেন, “মহিষগুলো ভারত থেকে চোরাই পথে আনা হয়েছে নিশ্চিত হয়েই বিজিবি সেগুলো জব্দ করে। গবাদি পশু সংরক্ষণ করা অসুবিধাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিক ভাবে মাইকিংয়ের মাধ্যমে নিলাম আহ্বান করা হয়।
“এটি মূলত কাস্টম বিভাগের কাজ। আর নিলাম থেকে সংগৃহীত টাকা সরাসরি চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা হয়।”
জব্দ করা মহিষগুলোর বাজার প্রায় মূল্য ৬০ লাখ টাকা জানিয়ে এই বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, “নিলামে মাত্র ১৭ লাখ টাকা দর ওঠায় সেটি স্থগিত করে মঙ্গলবার বিকালে পুনরায় নিলাম আহ্বান করা হয়।”
এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।