প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া পৌঁছালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে তাকে বরণ করে নেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় হাত নেড়ে অভ্যর্থনার জবাব দেন।
Published : 14 Jan 2024, 08:07 PM
ফলপ্রসূ ও মানুষের উপকারে আসে এমন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার বাসভবনে জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ নির্দেশ দেন।
টানা চতুর্থবার সরকার গঠনের পর দুদিনের সফরে শনিবার নিজ নির্বাচনি এলাকা টুঙ্গিপাড়া যান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে টুঙ্গিপাড়ার নিজ বাসভবনে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন এবং রাতে তিনি টুঙ্গিপাড়ার বাসভবনে অবস্থান করেন।
টুঙ্গিপাড়ার বাসভবনে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “শুধু টাকা খরচের জন্য নয়, প্রকল্প ফলপ্রসূ ও মানুষের উপকারে আসে কি-না তা বিবেচনা করতে হবে। যে কোনো প্রকল্প যখন আপনারা গ্রহণ করবেন তখন মাথায় রাখবেন এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ফলাফল কী আসবে। সেখান থেকে মানুষ কতটুকু লাভবান হবে বা দেশ কতটুকু লাভবান হবে।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “কিছু মানুষ সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করেই যাচ্ছে। তবে সরকার তাদের কথায় কর্ণপাত না করে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবে।”
বেলা ৩টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ার বাড়ি থেকে সড়ক পথে কোটালীপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন। বেলা ৩টা ৩৮ মিনিটে কোটালীপাড়া পৌঁছালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে তাকে বরণ করে নেন। প্রধানমন্ত্রীও এ সময় হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের অভ্যর্থনার জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে কোটালীপাড়া উপজেলা সদর বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষসহ সর্বত্র ছিল উৎসবের আমেজ। গোটা কোটালীপাড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়।
বিকালে বঙ্গবন্ধুকন্যা কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
সেখানে শেখ হাসিনা বলেন, “করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জিনিসের দাম বেড়েছে। আবার নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে। যে কারণে হয়ত সামনে আরও দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের মাটি উর্বর; আমাদের মানুষ আছে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে। জমি চাষ করা থেকে শুরু করে হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল পালন করতে হবে। আমার বিশ্বাস মাটি, মানুষ যদি কাজ করে কেউ আমাদের পেছনে টানতে পারবে না।”
নির্বাচনে অনেক বাধা-বিপত্তি ও ষড়যন্ত্র ছিল জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “কোনোমতে নির্বাচন না হতে পারে, এটাই ছিল আসল চক্রান্ত। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের জয় হয়েছে; গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। তাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে তখনই উন্নতি হয়েছে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ।”
বিএনপি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাদের আন্দোলন মানুষ পুড়িয়ে মারা, তারা জানে জ্বালাও-পোড়াও। নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলন করতে গিয়ে তারা বাসে, লঞ্চে ও রেলে আগুন দিয়েছে। তাদের ডাকে কেউ সাড়া দেয়নি, যারা এই জঘন্য কাজ করেছে তাদের কোনো ছাড় নেই। জ্বালাও-পোড়াওয়ের হুকুমদাতাদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে এই বাংলাদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত, স্মার্ট সোনারবাংলা হিসেবে গড়ে তুলব।”
সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দুদিনের সফরে নিজের নির্বাচনি এলাকা গোপালগঞ্জে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২২২টিতে জিতে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা শপথও নিয়েছে, যেখানে ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন।