কুমিল্লায় মা-মেয়েকে মারধর: থানায় ‘না নেওয়ায়’ আদালতে মামলা

সম্পত্তি দখল করে এলাকা ছাড়া করতেই হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ। তারা আমার মেয়ের ওপরও হামলা চালায়।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2022, 03:49 PM
Updated : 10 August 2022, 03:49 PM

কুমিল্লায় সম্পত্তির বিরোধে এক বিধবা ও তার মেয়েকে মারধর ও শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ‘থানায় ব্যর্থ হয়ে’ আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী।

বুধবার বিকালে ওই নারী জানান, গত ১ অগাস্ট ঘটনার রাতেই কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

তার অভিযোগ, পরে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি শুরু করে উল্টো ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য চাপ দিতে থাকে। ওই অভিযোগটির তদন্ত করছিলেন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার চকবাজার ফাঁড়ির এসআই বিমল দাস।

একটানা আট দিন চেষ্টার পরও পুলিশ মামলাটি এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত না করায় গত সোমবার কুমিল্লার আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বলে সদর উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের ওই নারী জানান।

বুধবার বিকালে বাদী পক্ষের আইনজীবী আতিকুল ইসলাম বলেন, থানা পুলিশ মামলাটি গ্রহণ না করায় বাধ্য হয়ে ওই বিধবা নারীকে আদালতে আসতে হয়েছে।

“সোমবার বিকালে কুমিল্লার ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ওই নারীর মামলাটি আমলে নিয়েছেন। এরপর আগামী ১৪ নভেম্বর আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন।”

মামলার নথির বরাতে আতিকুল জানান, মামলায় মন্তাজ মিয়াসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, গত ১ অগাস্ট বিকালে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন প্রতিবেশী মন্তাজ মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা। হামলার সময় মন্তাজ মিয়া বহিরাগত লোকজনও এনেছিলেন।

“সম্পত্তি দখল করে এলাকা ছাড়া করতেই হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ। তারা আমার মেয়ের ওপরও হামলা চালায়।”

তিনি বলেন, তার স্বামী মারা গেছেন ২০২০ সালে। মৃত্যুর আগে মন্তাজ মিয়ার কাছে দুই গণ্ডা জায়গা বিক্রি করেন তিনি। সেখানে এখন দোতলা বাড়ি করেছেন মন্তাজ। তার ভবনের পাশেই তাদের টিনের ঘর।

“বাড়ির ছাদের পানি আমাদের ঘরের দিকে ফেলেন মন্তাজ মিয়া। এতে বৃষ্টি এলেই আমাদের ঘরে তাদের ছাদের পানি পড়ে। এ নিয়ে আমার মেয়ে প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর হামলা চালায়।”

ওই বিধবার মেয়ে বলেন, “হামলার সময় আমাদের মা-মেয়েকে লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। এ ছাড়া আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়। পরে আমার মা-মেয়ে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।”

ঘটনার দিন রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “পুলিশের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার পাইনি। উল্টো পুলিশ আসামিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্থানীয়দের মাধ্যমে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করেছে। হামলাকারীদের মূল উদ্দেশ হলো আমাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে আমাদের সম্পত্তি দখল করা।”

তবে মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই বিমল দাস বলেন, “ঘটনার পরদিন বিকালে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তখন দুই পক্ষই বলেছেন তারা বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করবেন। পরে তাদের বলেছি তারা নিজেরা বিষয়টি সমাধান করতে না পারলে আমরা পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেব।”

পুলিশের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ ঘটনায় বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরও পড়ুন:

Also Read: কুমিল্লায় ‘বাড়ি দখল করতে’ মা-মেয়েকে পেটানোর অভিযোগ