“ঈদের পরই পহেলা বৈশাখ। চৈত্র মাসে এমনিতেই মাছের দাম কম থাকে; কিন্তু দুই উৎসবকে ঘিরে বাড়ছে।”
Published : 10 Apr 2024, 08:57 AM
নদীতে জাল ফেলার নিষেধাজ্ঞা চলায় এমনিতেই ইলিশের সংকট চলছে। অন্যদিকে দুই উৎসব ঘিরে চাহিদা তুঙ্গে; কিন্তু সেই তুলনায় মাছের সরবরাহ নেই। এ সুযোগে বরিশালে ইলিশের দাম চলে গেছে হাতের নাগালের বাইরে।
বরিশাল পোর্ট রোডে ইলিশের সবচেয়ে বড় মোকাম। সোমবার ওই মোকামে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ প্রতিমণ এক লাখ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
বরিশাল সদর মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি জহির সিকদার বলেন, “বর্তমানে বাজারে ইলিশ মাছ নেই। মেঘনা নদীতে গত দুই মাস ধরে মাছ শিকার বন্ধ। যেসব নদীতে এখন মাছ শিকার করা যায়, সেখানে ইলিশ নেই। তাই এ মাছের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।”
মাছ ব্যবসায়ী জহির সিকদার বলেন, “পোর্ট রোডে ইলিশের মোকামে সোমবার এক থেকে দেড়শ মণ ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে; যা স্বাভাবিকের তুলনায় ছয় ভাগের এক ভাগ। সামনে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ থাকায় ইলিশের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় সরবরাহ খুবই কম, তাই দাম বাড়ছে।
“সোমবার মোকামে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ প্রতিমণ এক লাখ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ছয়দিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ৬০ হাজার টাকা দরে। এ ছাড়া এক কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের মাছ ৯৬ হাজার টাকা এবং এক কেজি সাইজের মাছ ৮৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়।”
তিনি বলেন, এক কেজির নিচে ‘এলসি’ হিসেবে পরিচিত ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা দরে। আর ৬০০ গ্রাম সাইজের কম; যা ‘ভেলকা’ হিসেবে পরিচিত সেই মাছ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা দরে।
বরিশালের অভ্যন্তরীণ নদীর মাছের ‘স্বাদ বেশি’ হওয়ায় ‘দাম বেশি’ বলে জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ী রফিক মোল্লা।
তিনি বলেন, “ঈদ ও পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে মাছ কিনতে ঢাকা, চাঁদপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা বাজারে এসেছেন। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবেও চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সেই পরিমাণ মাছ নেই; তাই দাম বাড়ছে। দাম আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।”
পোর্ট রোড মোকামের ‘আল্লাহর দান’ ইলিশ ঘরের মো. ইমন বলেন, “দুই মাস ধরে নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। গত তিন দিনে মাছের দাম মণপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে বেড়েছে। দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকবে।”
‘আক্তার’ মৎস্য আড়তের কামাল মোল্লা বলেন, “নদীতে নিষেধাজ্ঞা; মাছ নেই। ঈদে নতুন অতিথি আসবে। সবাই তো এখন একটু ইলিশ মাছ খাওয়াতে চাইবে। এ জন্যই লোকজন ইলিশ কিনতে ভিড় করছে। কিন্তু সেই তুলনায় মাছ নেই।”
“ঈদের পরই পহেলা বৈশাখ। চৈত্র মাসে এমননিতে কম থাকে; কিন্তু দুই উৎসবকে ঘিরে মাছের দাম বাড়ছে।”
বরিশাল জেলা মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র মজুমদার বলেন, “বর্তমানে ইলিশ মাছের চাহিদা বেশি; তাই দাম বেশি। চাহিদা যত বাড়বে, দাম তত বাড়বে। ক্রেতারাই দাম বাড়িয়ে দেয়। এটা তো আমাদের করার কিছু নেই।”