৫৪ নদীর ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ বগুড়ায়

এর আগে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে প্ল্যাকার্ড ও লাল পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2023, 12:45 PM
Updated : 19 March 2023, 12:45 PM

তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বগুড়ায় বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে।

রোববার বেলা ১১টায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের উদ্যোগে বগুড়া শহরের সাতমাথায় এ সমাবেশ হয়।

এর আগে প্ল্যাকার্ড ও লাল পতাকা নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

বাসদের বগুড়া জেলার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম পল্টুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, জয়পুরহাট জেলার আহ্বায়ক ওয়াজেদ পারভেজ, সিরাজগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নব কুমার কর্মকার, নওগাঁ জেলা আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন মুকুল, রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক আলফাজ হোসেন, নাটোর জেলার সদস্যসচিব মোবারক আলী। 

সমাবেশে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, মানব দেহের শিরা-উপশিরার মতো ছড়িয়ে থাকা নদী ও পলি দিয়ে গঠিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি আজ পানির অভাবে হুমকির মুখে। এ অভাব প্রাকৃতিক কারণে নয়, মানুষের সৃষ্টি। চীন, নেপাল, ভুটান ও ভারত থেকে আসা নদীগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করে জালের মতো ছড়িয়ে গেছে। এই নদীগুলোই বাংলাদেশের প্রাণ প্রবাহ। কিন্তু আন্তর্জাতিক সমস্ত আইন ও নীতি লঙ্ঘন করে ভারত ৫৪টি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার আগ্রাসী তৎপরতার ফলে পানির প্রবাহ কমে গিয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশের অভ্যন্তরে নদী দখল ও দূষণ।

তিনি আরও বলেন, এক সময় দেশে ১ হাজার ২০০টি নদী ছিল। সরকারগুলোর ভ্রান্ত নীতি ও দখল-দূষণের কারণে নদী মরে গিয়ে এখন ২৩০-এ নেমে এসেছে। খরা মৌসুমে বেশিরভাগ নদীতেই পানি থাকে না। এক সময়ের প্রমত্তা অনেক নদীই এখন খাল-নালায় পরিণত হয়েছে। 

ওয়াজেদ পারভেজ বলেন, দেশের চতুর্থ বৃহত্তম আন্তর্জাতিক নদী তিস্তার ভূগর্ভস্থ ও ভূ-উপরিস্থিত জলপ্রবাহ নিয়ে এর অববাহিকার পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। যার মধ্যে বাংলাদেশে ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার আর ভারতে ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার।

বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উজানে গজলডোবায় বাঁধ দেওয়ার কারণে পানি পাচ্ছে না বাংলাদেশ। অথচ পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি, ভারত পানি প্রত্যাহার করতে নতুন আরও দুটি খাল খনন করছে। 

নব কুমার বলেন, খরা মৌসুম আসতে না আসতেই তিস্তার পানি প্রবাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে কখনও ৫০০ কিউসেকের নিচে নেমে যায়। অথচ ঐতিহাসিক গড় (১৯৭৩-১৯৮৫) অনুযায়ী পানির প্রবাহ থাকার কথা কমপক্ষে ১০ হাজার কিউসেক। প্রমত্তা তিস্তার এ বেহাল দশা কেন? পদ্মা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্রের পরে তিস্তা চতুর্থ বৃহত্তম নদী। উত্তর সিকিমে কৈলাস হ্রদ থেকে শুরু করে হিমালয় পর্বতের বুক চিরে সাপের মতো এঁকেবেঁকে ভারতের জলপাইগুড়ি হয়ে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ছাতনাই দিয়ে প্রবেশ করেছে তিস্তা। ৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত বাংলাদেশের স্বার্থ উপেক্ষা করে একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ৫ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ পানি পাচ্ছে না।