জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে বনের গহিন থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় বলে জানায় বাগেরহাট পুলিশ।
Published : 26 Feb 2024, 10:40 PM
সূর্যের সঙ্গে ছায়া মিলিয়ে সুন্দরবনের গহিন থেকে ফিরে এসেছেন ঘুরতে গিয়ে পথ হারানো ৩১ পর্যটক।
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে সোমবার বিকালে বনের গহিন থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন মোংলা থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম।
এর আগে সকালে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণি ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে ঘুরতে এসে তারা পথ হারিয়ে ফেলেন বলে জানান তিনি।
ওসি আজিজুল সাংবাদিকদের বলেন, সকাল ১০টার দিকে ৩১ সদস্যের একটি পর্যটক দল সুন্দরবনে ঘুরতে যান। করমজল বন্যপ্রাণি ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে তারা হেঁটে বনের ভেতরে প্রবেশ করেন।
এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে হাঁটতে হাঁটতে তারা কখন যে গহিনে চলে যান তা বুঝতে পারেননি। পরে ফেরার চেষ্টা করলে তারা পথ হারিয়ে ফেলেন। তাদের মধ্যে ফেরদৌস ইসলাম জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’-এ ফোন করে সাহায্য চান।
তিনি বলেন, “জরুরি সেবা থেকে থানায় বিষয়টি জানালে আমরা বনবিভাগকে জানাই। পরে সেই পর্যটকের নম্বরে ফোন করে তাদের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়।
“ফোনে তাকে বলি, ‘সূর্য এখন কোথায়? যদি সূর্য তোমাদের মাথার উপরে থাকে তাহলে ছায়া যেদিকে পড়বে তোমরা সেই ছায়া দেখে দেখে হাঁটতে থাক। আর বনের ভেতরে ঢোকার সময়ে তোমাদের কাছে থাকা ফোনে যেসব ছবি বা ভিডিও করেছো তা দেখে মিলিয়ে নাও।
“ছবি মিলে গেলে বুঝতে তোমরা ঠিক পথে হাঁটছ। এভাবে নিজেদের শরীরের ছায়া ও ছবি দেখে দেখে এক ঘণ্টার বেশি সময় হেঁটে করমজল বন্যপ্রাণি ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে তারা ফিরে আসেন।”
ফোনে তাদের সঙ্গে প্রতি পাঁচ থেকে সাত মিনিট পরপর খবর রাখা হয়; তাদের এই ফিরে আসা দারুণ শ্বাসরুদ্ধকর ছিল বলে জানান ওসি আজিজুল।
পর্যটক দলে থাকা ফেরদৌস রাতে সাংবাদিকদের বলেন, “সুন্দরবনে আগে কখনো আসিনি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আমরা ৩১ জন বনে আসি। সবাই হেঁটে বনের ভেতরে ঢুকি। গাছপালা দেখতে দেখতে কখন যে গহীনে চলে যাই বুঝতে পারিনি।
“যখন মনে হয়েছে আমাদের এখন ফেরা উচিত তখন আবার হাঁটা শুরু করি। আমরা হাঁটছি কিন্তু পথ ঠিক আছে কিনা তা বুঝতে পারি নাই। চারিদিকে শুধু গাছপালা। পথ হারানোর পর কয়েকজন ভয় পায়। তখন বুদ্ধি করে ‘৯৯৯’ এ ফোন করে সাহায্য চাই।”
ফেরদৌস বলেন, “পুলিশের সহযোগিতা না পেলে আমরা ফিরতে পারতাম কিনা জানি না। তবে সুন্দরবন দেখতে এসে দারুণ অ্যাডভেন্সার হয়েছে। এটা জীবনেও ভুলতে পারব না।”
করমজল বন্যপ্রাণি ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দরবনে ঘুরতে আসা অনেক পর্যটক উচ্ছৃঙ্খল হয়ে ওঠেন। তারা বনবিভাগকে না জানিয়ে বনের এদিক ওদিক ঢুকে পড়েন। আর এতে তারা সমস্যায় পড়েন।
সবশেষ একদল পর্যটক বনের গহিনে পথ হারিয়ে ফেললে বনবিভাগ ফোনে তাদের ফেরার কৌশল বলে দিলে তারা ফিরে আসেন বলে জানান তিনি।