শিক্ষার্থীকে নির্যাতন: শাবির ছাত্রলীগ কর্মী ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ

রিশাদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা ও শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান প্রক্টর।

মো. রিশাদ ঠাকুর।

শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগে ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ‘আজীবন নিষিদ্ধ’ করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ।

রোববার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

নিষিদ্ধ হওয়া মো. রিশাদ ঠাকুর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত বছর তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। তিনি স্নাতকোত্তর ভর্তি না হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৫০১৬ নম্বর কক্ষে অবৈধভাবে সিট দখল করে থাকতেন।

ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। তবে রিশাদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য আশরাফ কামাল আরিফের অনুসারী ছিলেন বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই আদেশে বলা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবৈধভাবে অবস্থান করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালানো ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অত্যাচার-নির্যাতন করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হল কর্তৃপক্ষের গঠিত কমিটির সুপারিশে রিশাদ ঠাকুরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি কখনোই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন না।’’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা ও শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

তিনি আরও বলেন, “ওই শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তি হননি। তার ছাত্রত্ব না থাকায় তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মানে, তিনি আজীবন ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ। তিনি হলে কিংবা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন না।’’

এর আগে শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী নুর মো. বায়েজীদকে কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠে রিশাদ ঠাকুরের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ওই শিক্ষার্থী।

এ ছাড়া চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি পায়ের উপর পা তুলে বসাকে কেন্দ্র করে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আব্দুর রব নাঈম নামের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছিল রিশাদের বিরুদ্ধে।

২০১৯ সালে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক রাজীব সরকারের ওপর হামলার ঘটনায় এক সেমিস্টার বহিষ্কৃত হয়েছিলেন রিশাদ ঠাকুর।

দীর্ঘদিন শাবিতে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা নেতা-কর্মীরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

এর মধ্যে একটি পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন শাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য আশরাফ কামাল আরিফ। তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়াতে ওই পক্ষটি চারজনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর মধ্যে একজন হলেন রিশাদ ঠাকুর।