তবে অনুষ্ঠানস্থলে কিছু হইচই হলেও সংঘর্ষ বা হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি গাছা থানার ওসি মো. ইব্রাহিম হোসেনের।
Published : 05 Jun 2023, 08:04 PM
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানের সামনেই দলের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার নগরীর মোল্লা কনভেনশন সেন্টারে নির্বাচন পরিবর্তী মূল্যায়ন সভার আয়োজন করে গাছা থানা আওয়ামী লীগ। সেখানেই এক কর্মীর বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় বলে সভায় উপস্থিত কয়েকজন জানিয়েছেন।
এ সময় গাছা থানা আওয়ামী লীগের কর্মী হাসান মাস্টার, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা এমারত হোসেন, গাছা থানা মৎস্যজীবী লীগের নেতা আশিক, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী রফিক, রমজান ও ফরহাদ আহত হন।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পরাজিত হওয়ার পর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের থানা ও ওয়ার্ড কমিটির সদস্যদের নিয়ে গত ৩১ মে থেকে নির্বাচন-পরবর্তী মূল্যায়ন সভার আয়োজন করা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় আয়োজন করা হয়েছিল গাছা থানার এই সভা।
মূল্যায়ন সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা জানান, সভার শুরুতে বক্তব্য দেওয়ার জন্য স্থানীয় এক নেতার নাম ডাকা হয়। তখন অপর একটি পক্ষ ওই নেতাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দিতে হইচই শুরু করেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে সভাস্থলে থাকা লোহার চেয়ার একে অন্যের দিকে ছুড়তে থাকেন তারা। পরে সেখানে থাকা জ্যেষ্ঠ নেতারা পরিস্থিতি শান্ত করেন। তবে লোহার চেয়ারের আঘাতে অন্তত ছয়জন আহত হন। আহতরা স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
তবে অনুষ্ঠানস্থলে ‘কিছু হইচই’ হলেও সংঘর্ষ বা হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি গাছা থানার ওসি মো. ইব্রাহিম হোসেনের।
পরিস্থিতি শান্ত হলে আজমত উল্লা খান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “যেকোনো সভায় এধরনের হট্টগোল করার অর্থ হলো দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সভার শৃঙ্খলা রক্ষা করতে কাজ করতে হলে তা আওয়ামী লীগের কর্মীদের জন্য দুঃখজনক, লজ্জাজনক।”
এ সময় দলকে সুসংগঠিত করার বিষয়ে নেতাকর্মীদের কাজ করতে আহ্বান জানান তিনি।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, “দলকে সুসংগঠিত করতে হবে, যাতে আগামী দিনে কেউ আবার আমাদের মধ্যে ঢুকে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে নৌকাকে হারিয়ে দিতে না পারে৷ আমার কাছে সব তথ্য আছে, ফেইসবুকেও অনেক কিছু দেখি। আমাকে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান করায় অনেকেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছেন, কেউ কেউ নিজেই প্রেসিডেন্ট হয়ে যাচ্ছেন। তাদের বলি, দয়া করে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৭ নম্বর ধারা পড়ে দেখবেন।”
প্রধানমন্ত্রী সবার চেয়ে ভালো বোঝেন মন্তব্য করে আজমত উল্লা বলেন, “তিনি দল পুনর্গঠনের পাশাপাশি দলকে পরিশুদ্ধ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। সবার সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যিনি নিজের স্ত্রীকে নৌকার পক্ষে আনতে পারেন না, সন্তানকে আনতে পারেন না তার আওয়ামী লীগে থাকা উচিৎ হবে না।”
এরপর সভা শেষ হওয়ার আগেই সভাস্থল ত্যাগ করেন আজমত উল্লা খান। পরে অনুষ্ঠানে যোগ দেন গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
গাছা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদম আলীর সঞ্চালনায় পরে অনুষ্ঠানটি আবার শুরু হয়।