হামলার ঘটনায় আহত রূপগঞ্জ থানার এসআই ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ওসি।
Published : 20 Aug 2023, 09:57 PM
নারায়ণগঞ্জ নগরীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে হামলায় পুলিশের এক সদস্যসহ অন্তত ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রোববার ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আযম বলেন, শনিবার রাত ৯টার দিকে নগরীর কেন্দ্রীয় ঈদগাহের পাশে এই ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের কাউকে এখনও আটক করা যায়নি। তবে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, “এ হামলার ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার এসআই মারুফ হাসানসহ কয়েকজনকে কোপানো হয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। এসআই মারুফ ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
“তিনি পুলিশ লাইনসে একটি কাজ শেষে রেস্তোরাঁর সামনে গিয়েছিলেন। তখন তিনি হামলার কবলে পড়েন। এ ছাড়া আহত একজন রিকশা চালককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজনকে পেটানো হয়েছে বলে জেনেছি।”
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শনিবার রাত ৯টার দিকে অর্ধশত কিশোর ও তরুণের একটি দল এ হামলা চালায়। মাসদাইরের ঈদগাহ রোড দিয়ে তারা প্রবেশ করে বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তায় অস্ত্র প্রদর্শন করে।
এ সময় রাস্তার পাশে থাকা ‘বেক এন বিনস’ নামের একটি রেস্তোরাঁ, মুদির দোকান ও বাসাবাড়ির জানালার কাঁচ ভাঙচুর করা হয়। পরে মাসদাইরের আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঢুকে সেখানেও ভাঙচুর চালায় হামলাকারীরা।
‘বেক এন বিনস’ রেস্তোরাঁর মালিক জোবায়েদ আহমেদ সোহাগ বলেন, “হঠাৎ ধারালো অস্ত্র নিয়ে লোকজন আমার রেস্তোরাঁয় ঢুকে পড়ে। ওই সময় ভেতরে কাস্টমার ও আমার কিছু অতিথি ছিলেন। হামলাকারীরা অতর্কিতভাবে রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর শুরু করে। তখন ভেতরের সবাই টেবিল উল্টো করে তার পেছনে গিয়ে নিজেদের রক্ষা করি।
“আমরা কেউ সামনে এগোলে কুপিয়ে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন হামলাকারীরা। ভাঙচুরের সময় রেস্তোরাঁর কাস্টমার ও কর্মচারীদের কয়েকজনের শরীরে ভাঙা কাঁচের আঘাত লেগেছে।”
তিনি আরও বলেন, রেস্তোরাঁর বাইরে দাঁড়ানো একজন পুলিশ অফিসার নিজের পরিচয় দিয়ে হামলাকারীদের সেখান থেকে চলে যেতে বললে তার হাতে কোপ দেন তারা। বুকেও আঘাত করেন। এ ছাড়া রাস্তায়ও কয়েকজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে হামলাকারীরা। পরে সামনে এগিয়ে গিয়ে একটি আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর করে হামলাকারী।
হামলাকারীদের কেউই পূর্বপরিচিত নয়; এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান জোবায়েদ আহমেদ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, “মাসদাইরে আওয়ামী লীগের কোনো কার্যালয় আছে বলে আমার জানা নেই। স্থানীয়ভাবে কেউ হয়তো কোনো কার্যালয় করেছেন। তবে সেখানে হামলা হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে আমাকে কেউ জানায়নি।”
এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে জানিয়ে ওসি নূরে আযম বলেন, “ঠিক কী কারণে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা স্থানীয়দের জিজ্ঞাস করেছি, কেউই কোনো কথা বলছেন না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ঘটনার সময় ধারণ করা কিছু সিসি টিভির ফুটেজ পেয়েছি। এসব ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”