কুড়িগ্রামে ‘অর্থনৈতিক অঞ্চল’ দেখতে যাচ্ছে ভুটানের প্রতিনিধিদল

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে স্থান নির্বাচন চূড়ান্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে জিটুজি ভিত্তিক প্রস্তাবিত ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপনের সম্ভাবনা যাচাই করতে ভুটানের একটি প্রতিনিধি দল দুদিনের সফরে কুড়িগ্রামে আসছেন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুশফিকুল আলম হালিম জানান, ভুটান সরকারের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রোববার কুড়িগ্রাম সফরে আসছেন।

জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সদরের ভোগডাঙা ইউনিয়নের মাধবরাম মৌজার অন্তর্ভুক্ত ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি, অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। ধরলা ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে সৈয়দ ফজলুল করিম (রহ.) জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার উত্তর-পূর্ব দিকে এ খাস জমির অবস্থান।

চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিল। এ ছাড়া বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন ভুটানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকবেন।

তারা প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থানসহ সোনাহাট স্থলবন্দর ও চিলমারী নৌবন্দর পরিদর্শন করবেন বলে সফরসূচি থেকে জানা গেছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি বেজা কর্তৃপক্ষের কাছে বন্দোবস্ত দিয়েছি। আরও ৮০ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।”

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে ভুটানের ফুন্টশোলিং এলাকার দূরত্ব কম; সহজে যাতায়াত করা যায়। ফলে ভুটানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হলে জেলার আর্থ-সামাজিক অবস্থায় পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি নতুন নতুন ব্যবসা-বা‌ণি‌জ্যের দ্বার উন্মুক্ত হবে; শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটবে।

এ ছাড়া জেলার স্থলসীমান্ত প‌থে বহুল প্রতীক্ষিত ইমি‌গ্রেশন ব‌্যবস্থা চালু ত্বরা‌ন্বিত হ‌বে বলেও মনে করেন তারা।

ইউএনও মুশফিকুল আলম বলেন, কুড়িগ্রাম জেলার বৃহৎ এলাকা চরাঞ্চল। এ অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য জেলায় কল-কারখানা প্রয়োজন। এখান থেকে যেহেতু ভুটান অনেক কাছে সেহেতু ভুটানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে পারলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত গতিতে বাড়বে। মানুষের সক্ষমতা বাড়বে, আগের চেয়ে ভালো জীবনযাপন করতে পারবে। সরকার সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলছেন, কুড়িগ্রামের সঙ্গে ভারত ও ভুটানের কানেক্টিভিটি বেশ ভালো। জেলার দুটি স্থলবন্দর ও চিলমারী নৌ-বন্দরের সঙ্গে ভুটানে যোগাযোগ সুবিধা রয়েছে।

“বিস্তৃীর্ণ চরাঞ্চল, কাঁচামাল তৈরির সম্ভাবনা এবং মানবসম্পদ মিলিয়ে কুড়িগ্রামে যৌথ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে।”