৯০ সালে আমুকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে শেখ হাসিনার কাছে গিয়েছিলেন বলেও জানান শাহজাহান ওমর।
Published : 21 Dec 2023, 12:02 AM
নিজের নির্বাচনি এলাকা ঝালকাঠি-১ আসনের রাজাপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের যারা বিরোধিতা করছেন তাদের কীভাবে পক্ষে আনতে হয় সেটি জানা আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি থেকে সদ্য নৌকায় উঠা শাহজাহান ওমর।
বুধবার বিকালে রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনজীবী এ এইচ এম খায়রুল আলম সরফরাজ সাংবাদিকদের কাছে বলেছিলেন, তারা নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নয়; কাজ করবেন ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনিরের পক্ষে।
এরপর রাতে বরিশাল নগরীর বগুড়া রোডে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর বাসায় এক সভা শেষে সাংবাদিকদের শাহজাহান ওমর বলেন, “আমার আগের যা দলবল ছিলো সব নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি। রাজাপুরে গুটিকয়েক নাবালক ছেলে আছে। ওরাও এসে যাবে, এটা কোনো ঘটনা না। আর না আসলে কিভাবে আনতে হয় সে ওয়ে আমার জানা আছে। এতে কোনো গায়ের জোর লাগবে না।
রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ায় ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো পার্টি থাকবে না’ মন্তব্য করে শাহজাহান ওমর বলেন, “আমাদের যোগ্যতায় আমাদের কোয়ালিটি ও আদর্শে তাদের আমরা আওয়ামী লীগে কনভার্ট করব।”
এর আগে শাহজাহান ওমর সেখানে রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সভা করেন।
রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই নির্বাচনের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবেন জানিয়ে শাহজাহান ওমর সাংবাদিকদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “আপনারা বানিয়ে-টানিয়ে যা লেখেন তা সত্য নাকি? আমি বলি ‘ক’, আপনারা ‘খ’ ‘গ’ মিলিয়ে একটা প্রবন্ধ লেখেন।
“রাজাপুরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখানে। আমির হোসেন আমু ভাই এখানে। জেলা নেতারা এখানে রয়েছেন, তাহলে বর্জন করল কে? আমি বর্জনের লোক? ওদের দলকে আমি গৌরবান্বিত করেছি, অলঙ্কৃত করেছি। ওরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করেছে, বর্জন করার প্রশ্নই ওঠে না।
পরবর্তীতে আবার দল পরিবর্তন করবেন কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক বিএনপি নেতা বলেন, “তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহা। আই অ্যাম এ ফ্রিডম ফাইটার, আই ফট ফর দিস কান্ট্রি। আমি তিনবার গুলি খেয়েছি। আমার তো সংগ্রামী চেতনা। আমার চেতনা তো অন্য লাইনে হতে পারে না। এই বেসিক জিনিসটা আপনারা কেন বোঝেন না? গুরু (আমু) তো বলল, আমি জয় বাংলার লোক, কতবার বলব।”
নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর আমির হোসেন আমুকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে দলপ্রধান শেখ হাসিনার কাছে গিয়েছিলেন বলেও এ সময় আলাপে জানান শাহজাহান ওমর।
পাশে বসা আমির হোসেন আমুকে দেখিয়ে সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “১৯৯০ সালে আমার এই নেতা আমাকে নিয়ে শেখ হাসিনার কাছে গিয়েছিলেন। তখন নেত্রী মুচকি হেসে বললেন, এক প্রার্থী এসেছেন যে আমার (শেখ হাসিনা) বাবার বাল্যবন্ধু, কুদ্দুস সাহেব। তাকে তো ওয়াদা করেছি।
“তখন আমি বললাম, আমু ভাই, আমি এখন কী করব? আমু ভাই বললেন, যেখানে আছ সেখানেই থাক। এই আমু ভাই কিন্তু আমাকে আবার বিএনপিতে পাঠায়, দোষ কিন্তু আমার না”, বলেন শাহজাহান ওমর।
এ সময় ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসের আমু বলেন, “দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূলবোধ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে- সর্বোপরি সাংবিধানিক ভিত্তি বজায় রাখার জন্যই জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন শাহজাহান ওমর।
“জাতীয় স্বার্থে যোগদান করার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আজকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ঝালকাঠি-১ সংসদীয় আসন থেকে”, বলেন আমু।
এ সময় রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।