রাস্তাটি রক্ষায় গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধনও হয় বলে জানায় এলাকাবাসী।
Published : 02 Aug 2023, 11:33 PM
ঝালকাঠির রাজাপুরে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ বরাবর রাস্তা নির্মাণ করে নজরদারি করতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এ নিয়ে রাস্তার পক্ষে-বিপক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের সোনারগাঁও জে এ কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫৬ নম্বর আরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দিয়ে বানানো রাস্তা নিয়ে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ছবুর খান, রাজু মোল্লা, রাকিব মোল্লা, মফেজ আলীসহ কয়েকজন জানান, বিদ্যালয় দুটি পাশাপাশে। দুটি প্রতিষ্ঠানের জন্য খেলার মাঠ একটিই। প্রতিষ্ঠান দুটিসহ মাঠের জমি দাতা ওয়াজেদ আলী খান। তিনি বর্তমানে প্রয়াত।
তারা জানান, বিদ্যালয় দুটির পেছনের বাসিন্দারা মাঠের মাঝ দিয়েই দীর্ঘদিন ধরে চলাফেরা করে আসছেন। সম্প্রতি তারা মাঠ বরাবর পাকা রাস্তা করতে চাইলে জমিদাতা ওয়াজেদ আলীর ভাতিজা ছরোয়ার খান নিজ খরচে মাঠের বাইরে দিয়ে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করে দেন। কিন্তু স্থানীয় কিছু লোক মাঠের মাঝ বরাবরই রাস্তা নির্মাণ করেন। আর সে রাস্তা রক্ষা করতে সিসি ক্যামেরার লাগিয়ে বাড়িতে বসে নজরদারিও করছেন।
রাস্তাটি রক্ষায় গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের সামনে লোকজন নিয়ে মানববন্ধন করেন। এ অবস্থায় ওই এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় বলেন, “বিষয়টি আমরা নজরদারিতে রেখেছি। উপজেলা প্রশাসন দুপক্ষের সাথে এ নিয়ে বসবে।”
ইমন, শাহিন, রাহাত, জাকারিয়াসহ কয়েকজন স্কুলশিক্ষার্থী বলে, এটাই তাদের এলাকার একমাত্র খেলার মাঠ। খেলাধুলাসহ অনুষ্ঠান আয়োজনের স্বার্থে মাঠ থেকে রাস্তাটি অপসারণ করে আগের অবস্থায় ফেরানোর দাবি জানায় এরা।
ছরোয়ার খান বলেন, “স্থানীয় মানুষের চলাচলের কথা চিন্তা করে স্কুলের পাশ থেকে জায়গা ক্রয় করে একটি রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছি। তারপরও রাতের আঁধারে স্থানীয় প্রভাবশালীরা মাঠ নষ্ট করে রাস্তা নির্মাণ করেছে।”
তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নাসির সিকদার বলেন, “রাস্তাটি ৫৬ নম্বর আরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অংশে পড়েছে। রাস্তা নির্মাণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ কোনো বাধা নেই।”
সোনারগাঁও জে এ কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ইসমাইল হোসেন বলেন, “একই ভূখণ্ডে দুটি স্কুলের জন্য খেলার মাঠ একটিই। মাঝ দিয়ে রাস্তা বানানোয় মাঠটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়। এতে খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলামুখী করতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা কিন্তু বাস্তবায়িত হবে না।”
মাঠের মাঝ দিয়ে রাস্তা চান না বলে জানান বিদ্যালটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. গোলাম বারী খান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা আলম বলেন, “স্কুলের খেলার মাঠ নষ্ট করে রাস্তা করার কোনো সুযোগ নেই। সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।”