বরিশাল ২ আসনে যুদ্ধাপরাধী পরিবারের প্রার্থী চান না মুক্তিযোদ্ধারা

এ বিষয়ে ওই সংসদ সদস্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হলেও একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন অভিযোগ আনছেন বলে দাবি তার।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2023, 02:46 PM
Updated : 11 Nov 2023, 02:46 PM

বরিশাল ২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমকে যুদ্ধাপরাধীর সন্তান দাবি করে তাকে আর নৌকার প্রার্থী হিসেবে দেখনে না চাওয়ার কথা বলছেন ওই এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা।

শনিবার দুপুরে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবি, নৌকা প্রতীকে আর নয় যুদ্ধাপরাধী পরিবারের প্রার্থী’ শিরোনামে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় এ সংবাদ সম্মেলনে জেলার বানারীপাড়া ও উজিরপুর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন।

এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হলেও একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনছেন বলে দাবি করেন তিনি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর হোসেন লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, “এমপি শাহে আলমের বাবা ডা. সায়েদউদ্দিন রাজাকার মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন বানারীপাড়ায় সব লুটপাট ও অগ্নিসংযোগকারী দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় শাহে আলমের বাবা ও চাচার নাম আছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

তাই ওই এলাকায় স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ড অবসানের লক্ষ্যে যুদ্ধাপরাধী পরিবারের কাউকে তারা সংসদ সদস্য হিসেবে চায় না।

জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “মেজর এমএ জলিল, ড. জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, সুখরঞ্জন সমাদ্দার ও বেনী লাল দাস গুপ্তসহ অগণিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চারণভূমি এ জনপথ। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বরিশাল ২ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তালিকাভুক্ত যুদ্ধাপরাধী ডাক্তার সায়েদউদ্দিন তালুকদারের ছেলে শাহে আলমকে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা হতবাক হয়েছিলেন।”

তবুও মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকার সম্মানে তারা শাহে আলমের পক্ষে তারা কাজ করেন বলে মুক্তিযোদ্ধারা দাবি করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর হোসেনের অভিযোগ, “সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শাহে আলম তার পরিবারের পথ অনুসরণ করেছেন। জনগণের কথা না ভেবে নিজেই বিত্ত-বৈভবের পাহাড় গড়েছেন।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, “শাহে আলম কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে সহযোগিতা করেননি। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা কুমুদ বিহারী গুহ ঠাকুরতার সমাধি গুঁড়িয়ে দিয়েছেন।

“মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. জোতির্ময় গুহ ঠাকুরতার বাসভবন ভেঙেছেন। স্কুলের নামের জমি দখল করেছেন। রাজাকারদের নিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে হাতুড়িপেটা করে সংসদ সদস্য শাহে আলমের বাহিনী।”

মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য বানারীপাড়া উপজেলার তেতলা গ্রামের বেশকিছু হিন্দু পরিবারকে ভিটেছাড়া, খাল দখল করে বাড়ি ও প্রাচীর নির্মাণ করেছেন। শ্মশানের জমি দখল করে নির্মাণ করেছেন গ্যারেজ ও বৈঠকখানা। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সাইদুর রহমান, নকিতুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার ও ছফেদ বয়াতিসহ ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে স্বাক্ষর করেছেন ৩২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা।