ত্রিপুরাদের বর্ষ বরণের মূল আয়োজন শুরু হবে আগামী ১২ এপ্রিল। চলবে তিন দিন।
Published : 05 Apr 2024, 01:50 PM
পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করতে পাহাড়ে বাজল ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব ‘বৈসু’র সুর।
ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে গরিয়া নৃত্য, বোতল নৃত্য ও খেলাধুলায় বর্ষবরণের এই উৎসবে মেতেছেন ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষরা।
বৃহস্পতিবার সকালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার প্রত্যন্ত জনপদ পোমাং পাড়ায় ‘বৈসু’ উৎসবের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী।
বৈসু উদ্যাপন উপলক্ষ্যে সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রাম থেকে নারী, শিশু ও তরুণ- তরুণীরা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। এসময় গরিয়া বা গরয়া নৃত্য পরিবেশন করে ত্রিপুরা নৃত্য দল। এছাড়া দিনা ড্যান্স অ্যাকাডেমির শিল্পীরা বোতল নৃত্যের মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করে।
তবে ত্রিপুরাদের বর্ষ বরণের মূল আয়োজন শুরু হবে আগামী ১২ এপ্রিল । চলবে তিন দিন। পুরোনো বছরের শেষ দুই দিন উদ্যাপন করা হবে হারি বৈসু, বৈসুমা আর নতুন বছরের প্রথম দিন উদ্যাপন করা হবে বিচি কাতাল। এবার উৎসব চলবে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে মংসুইপ্র চৌধুরী বলেন, “আজকে পাহাড়ে মানুষ শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের সামাজিক উৎসব পালন করছে। আজ থেকে পাহাড়ে বৈসাবি উদ্যাপন শুরু হলো। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বর্ণিল উৎসব এখানকার মানুষ নতুন বছরকে বরণ করে নিবে।”
এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “শান্তি চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়েছেন। তাই আজ এখানকার মানুষ উৎসব পার্বণে শামিল হতে পারছে।”
জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “যদিও বৈসু ১২ তারিখ থেকে শুরু হবে কিন্তু এখন থেকেই বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা ঐতিহ্যগতভাবে যেগুলো উদ্যাপন করে আসছি সেখানে অর্থনৈতিক বিষয়টা তেমন ছিল না। পারিবারিক-সামাজিকভাবে গ্রাম ভিত্তিক প্রোগ্রামগুলো করতাম। ছড়ায় ফুল পূজা, চড়ক পূজা করা হত। কিন্তু সেগুলো অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে গেছে।
“সবকিছুতেই এখন একটা বাণিজ্যিক ব্যাপার হয়ে গেছে। আমাদের প্রকৃত যে ঐতিহ্য রয়েছে সেগুলো ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন আছে।”
বৈসু উদ্যাপন কমিটির প্রধান আয়োজক কার্তিক ত্রিপুরা বলেন, “ত্রিপুরাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। যুগ যুগ ধরে আমাদের যে সংস্কৃতির চর্চা হয়ে আসছিল তা কালের বির্বতনে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। নিজের স্বকীয়তা রক্ষায় বৈসু উদ্যাপনের গুরুত্ব রয়েছে।”
পোমাং পাড়ায় এই আলোচনা সভার আগে প্রদীপ প্রজ্বলন করেন অতিথিরা।
বৈসু উদ্যাপন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কাশেম, ভাইস চেয়ারম্যান সীমা দেওয়ান, মেরং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ঘনশ্যাম ত্রিপুরা প্রমুখ।