৬৯ বছর বয়সি আবুল সরকার বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন৷
Published : 30 Jan 2024, 09:03 AM
আর গাইবেন না লাখ লাখ মানুষের প্রিয় বাউল শিল্পী আবুল সরকার৷ দেশজুড়ে পরিচিত এই শিল্পী নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিজ বাড়িতে গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান।
রাত পৌনে ১টার দিকে ফতুল্লা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বরেণ্য এ বাউলের জানাজায় সতীর্থ ও ভক্তরা অংশ নেন৷ রাতেই স্থানীয় একটি কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়৷
৬৯ বছর বয়সি আবুল সরকার বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন৷
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগরের সুরদিয়া গ্রামে ১৯৫৫ সালের ১০ ডিসেম্বর জন্ম এই গুণী শিল্পীর৷
তরিকতপন্থী ধর্মপ্রাণ পিতা কফিল উদ্দিন সরদারের কাছে ছোট বেলাতেই ভাবনার বিকাশ ঘটে তার৷ বালক বয়সে ঢাকার শ্যামপুরে খালার বাড়িতে থেকে পড়াশোনার সময় শিল্পী হাজী সাহাব উদ্দিন বয়াতির সঙ্গে পরিচয়ের পর তার দলভুক্ত হন।
ওস্তাদের নির্দেশে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা চালিয়ে যান তিনি। পরে ভর্তি হন ওয়াজঘাট বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে।
দীর্ঘ সময় সাহাব উদ্দিন বয়াতির সান্নিধ্যে বাউল ও পালাগানের দীক্ষা নেওয়া আবুল সরকার ১৯৭৮ সালে নিজের দল গঠন করেন৷ নিজের দল নিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে ঘুরে গান পরিবেশন করেছেন তিনি।
নিজের লেখা সুফি ধারা, পালাগান গেয়ে পরিচিতি পাওয়া আবুল সরকারকে অনেকে ‘কবি গানের সরকার’ও বলে থাকেন৷
এ বাউল শিল্পীর প্রকাশিত কয়েকশ’ গানের মধ্যে ‘খাজা বাবার জীবনী‘, ‘বড় পীরের জীবনী’ ও ‘কোন বাগিচার ফুল’ অ্যালবামের গানগুলো বেশ জনপ্রিয় হয় বলে জানান তার দলের হারমোনিয়াম বাদক নজরুল ইসলাম৷
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন আবুল সরকার৷ জীবন সায়াহ্নেও বাউল শিল্পীদের সঙ্গে কাটাতেন সময়৷
নারায়ণগঞ্জ জেলা বাউল শিল্পী কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ বাঁধন বলেন, “বাউল সংগীতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন আবুল সরকার৷ তিনি সুফি ঘরানার লোক ছিলেন৷ তার মৃত্যু বাউল সংগীতে অপূরণীয় ক্ষতি৷”
গুণী এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি৷
[প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক]