অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুরে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী।
Published : 20 Oct 2022, 10:08 PM
লোকালয়ে জমে থাকা পানির কারণে যশোরের তিন উপজেলার ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক হিসাবে বলছে, বুধবার পর্যন্ত গোটা জেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪৩১ জন; এর মধ্যে অভয়নগর উপজেলাতেই আক্রান্ত হয়েছে ৩৩১ জন। মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলায় আট জন করে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে এসেছে।
সেখানে নওয়াপাড়া নৌ-বন্দরে পণ্য বহনকারী বার্জ বা জাহাজে থাকা লোকজনও ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন। এর বাইরে চৌগাছা উপজেলায় পাঁচজন এবং বাঘারপাড়া উপজেলায় একজন আক্রান্ত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সারাদেশে ২৮ হাজার ৬৯৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১১০ জনের।
আগে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা রাজধানীতে বেশি থাকলেও এখন জেলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে।
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য প্রকল্প কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. মাহমুদুর রহমান রিজভী বৃহস্পতিবার বলেন, “উপজেলার অংশ বিশেষ হচ্ছে এ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার অভিশপ্ত ভবদহ এলাকা সংলগ্ন। ভবদহের পানি এলাকায় উপচেপড়ে খানা-খন্দকে জমে থাকে।“
পানিতে এডিস মশা ব্যাপকহারে ডিম পাড়ে এবং হাজার হাজার মশার জন্ম হয়। মশার লার্ভা দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বড় হয়। এদের মধ্যে যে সব মশা স্ত্রী জাতীয় তা ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করে। এ মশায় কামড়ালে ডেঙ্গু জ্বর হয়।
চিকিৎসক মাহমুদুর আরও জানিয়েছেন, পানিতেও এডিস মশার জন্ম হয়। তবে তার সংখ্যা কম। জমে থাকা পানিতে লার্ভার জন্ম হয় বেশি। এ ছাড়া অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার আংশিক ড্রেনের পানিতে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে। যারা নওয়াপাড়া বন্দরে জাহাজে অবস্থান নিচ্ছে তাদের মধ্যে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের দুজন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।
অভয়নগরের চলিশিয়া, সুন্দলী, বাঘুটিয়া ও পৌরসভায় কিছু অংশে ডেঙ্গু ভাইরাসের নমুনা পাওয়া গেছে বলে জানান এই চিকিৎসক।
কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সেখানে ১৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর ভেতর আট জন মনিরামপুরের। তারা মণিরামপুর হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে যাতায়াত সুবিধার কারণে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
“মণিরামপুর ও কেশবপুরের অনেক এলাকা হচ্ছে ভবদহ সংলগ্ন। এসব এলাকার লোক বেশি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন।”
জেলা সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাসও বলেন, ভবদহ সংলগ্ন এলাকায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, “ভবদহের পানি যখন ওভার ফ্লো হয়েছে তখন বিভিন্ন স্থানে পানি জমেছে। জমে থাকা ওই পানিতে এডিস মশার বংশ বিস্তার ঘটছে। এতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ওইসব এলাকায়। তবে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক রয়েছে।”