বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছেন।
Published : 23 Jan 2024, 10:15 PM
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একটি মাদ্রাসায় ঘুষ নিয়ে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে ডিসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ১১ জনের নামে মামলা হয়েছে।
গোন্তা আলিম নামের ওই মাদ্রাসার চাকরি না পাওয়া তিন প্রার্থী তাড়াশের সহকারী জজ আদালতে গত সোমবার মামলাটি করেন। মঙ্গলবার এটি জানাজানি হয়।
এদিন ওই আদালতের পেশকার মুনতাসীন মামুন জানান, বিচারক লোকমান হাকিম মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের কারণ দর্শাতে নোটিস দিয়েছেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
চাকরি না পেয়ে হাদিউল ইসলাম, জয় ইসলাম ও ফাতেমা খাতুন নামের তিন আগ্রহী প্রার্থী যৌথভাবে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
বাদীদের পক্ষের আইনজীবী একরামুল হক বলেন, মামলাটি দায়েরের পর শুনানি শেষে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের ৩০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শনার আদেশ দিয়েছে আদালত।
মামলায় সিরাজগঞ্জের ডিসি, তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ), একই বোর্ডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা অফিসার, তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, গোন্তা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ টি আর আব্দুল মান্নান, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান এবং নিয়োগ পাওয়া তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের গাবরগাড়ি গ্রামের তিনজন-সেলিম রেজা, লাউতা গ্রামের সাগর ও স্বপ্না খাতুনকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার বরাতে পেশকার মুনতাসীন বলেন, গোন্তা আলিম মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তাকর্মী এবং আয়া পদে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালের ২৭ জুন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর চাকরি প্রত্যাশীরা আবেদন করেন। ২০২৩ সালের ২১ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র দেওয়া হয়।
নিয়োগ পেতে আগেই টাকা দিয়েছেন তবুও প্রতারিত হতে পারেন, এমন আশঙ্কায় পরীক্ষার দিন একজন প্রার্থী কেন্দ্রে কীটনাশক পান করেন এবং আরেকজন পরীক্ষা কক্ষে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে এজাহারে বলা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, তখন ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মাদ আবু নঈম নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে চলে যান। পরে পরীক্ষার ভেন্যু পরিবর্তন করে এবং অন্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি গোপন রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
এরপর ২৯ ডিসেম্বর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ওই চার পদের বিপরীতে নিয়োগ দিয়ে মাদ্রাসা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠায় বলে মামলায় বলা হয়েছে।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ওই নিয়োগের বিষয়ে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ এসেছিল। আমি বিষয়টি তদন্ত করতে দিয়েছি। তবে প্রতিবেদন এখনো পাইনি।”
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের ডিসি মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান মোবাইল ফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোনোটাতেই আমি বা ইউএনও যুক্ত নই।
“এ ধরনের সিভিল মামলাগুলোর ক্ষেত্রে প্রশাসনকে বিবাদী হিসেবে যুক্ত করতে হয়। এক্ষেত্রেও হয়ত তাই করা হয়েছে।”