দুর্গাপুর ইউনিয়নের দীঘলটারী গ্রামে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
Published : 08 Jul 2023, 01:41 AM
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সীমান্তে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত বন্দুকধারী।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের দীঘলটারী (কুমারটারী) গ্রামে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পাশে শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মো. মোজাম্মেল হক জানান।
নিহত রফিকুল ইসলাম ট্রেরে (২২) উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কনপুরের মৃত হায়দার আলীর ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, রফিকুল ইসলাম ট্রেরে তাদের তাদের পাট ক্ষেত দেখতে সীমান্তবর্তী কুমারটারী এলাকায় ভারতীয় সীমান্তের ৯২৭ নম্বর পিলারের সাব পিলার ৩/এস এর কাছে যান।
এ সময় রফিকুলের সঙ্গে তার দুই বন্ধু ছিলেন বলে এলাকার লোকজন জানান।
তারা আরও জানান, ভারতীয় সীমান্তের গিদালদহ থানার নগরটারী গ্রামের দুর্বৃত্তরা রফিকুলকে গুলি হত্যা করে। এরপর তারা গুলিবিদ্ধ রফিকুলকে দালাইনামা ছড়ায় ভেলায় করে ভাসিয়ে দেয়। ওই ভেলায় নিহত রফিকুলের দুই বন্ধুও ছিলেন। তবে বাংলাদেশ অংশে এসে তারা পালিয়ে যান।
পরে ইব্রাহিম নামের এক জেলে স্থানীয়দের খবর দিলে তারা বিজিবিকে জানায়। স্থানীয় মোগলহাট ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে বিকালে আদিতমারী থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদশী জেলে ইব্রাহিম জানান, দালাইনামা ছড়ায় দুপুরে মাছ ধরার সময় সীমান্তের পাট ক্ষেতের কাছে গুলির শব্দ শোনেন। কিছুক্ষণ পর দেখতে পান ভেলায় করে দুজন লোক অসুস্থ একজনকে নিয়ে বাংলাদেশ অংশে আসছে।
“আমি তখন ছুটে যাই। গিয়ে দেখি রফিকুলের গলায় গুলি লেগেছে। ইতোমধ্যে তার দুই বন্ধু লাশ ভেলায় ফেলে চলে যায়। তখন আমি চিৎকার করি। এরপর স্থানীয়রা এসে বিজিবিকে খবর দেয়।”
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফেটেন্যান্ট কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিএসএফ গুলি করেনি বলে তারা নিশ্চিত করেছে। কে বা কারা গুলি করেছে তা পুলিশ তদন্ত করে বের করবে।
লালমনিরহাট থানার ওসি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ভারতীয় সীমান্তের ৯২৭ নম্বর মেইন পিলারের ৩/এস সাব পিলারের কাছ থেকে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোগলহাট এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার গিদালদহ ব্লকের দরিবস এলাকার বাসিন্দা ‘মাদক ব্যবসায়ী’ আব্দুর রহমান ওরফে ফকরা বাবু ঈদের দুইদিন আগে (গত ২৭ জুন) দরিবস এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে মারা যান। ফকরা বাবু নিজেকে দ্বৈত নাগরিক পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশের মোগলহাট এলাকায় মাদকের ব্যবসা করতেন।
নিহতের ছোটভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, “এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমার ভাই ট্রেরেকে তারা সীমান্তে নিয়ে গেল এবং ভাইকে গুলি করে হত্যা করা হলো; আর ওরা দুজন লাশ বাংলাদেশ অংশে রেখে পালিয়ে গেল। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।”