নীলফামারী জেলার ছয় উপজেলায় ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৬১ দশমিক ০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
Published : 24 Feb 2024, 09:16 AM
“পাঁচ দিন থাকি বৃষ্টিতে হামার কষ্ট বাড়িছে। বৃষ্টির তানে মাইনষি বাড়ি থাকি বাহিরা হচে না, মাইনষি বাড়িত থাকি না বাহির হইলে রিকশাত কাই ছড়িবে?”
রোববার নীলফামারী শহরের মরাল সংঘ মোড়ে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন রিকশাচালক ছকমল হোসেন ।
৩৫ বছর বয়সী এই রিকশাচালক আরও বলেন, “হামার কামাই রোজগার কমি গেইছে বাহে। বৃষ্টিত ভিজিয়া রিক্সা নিয়া সকাল ৯টার সময় বেড়াইছি দুপুর দুইটা পর্যন্ত কামাই হইছে ৭০ টাকা। রিক্সার জমা দিবার নাইগবে ১০০টাকা। এলা জমা দিমো কী? আর খামো কী?।”
সরেজমিনে দেখা যায়, হাট-বাজার-রাস্তা ঘাটে কমছে জনসমাগম। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পাশাপাশি বেড়েছে তিস্তাসহ জেলার সকল নদ-নদীর পানি।
টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত নীলফামারী জেলার জনজীবন। জেলার ছয় উপজেলায় ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৬১ দশমিক ০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ডিমলা আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর সবুর মিয়া, ডিমলা উপজেলায় ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. লোকমান হাকীম বলেন, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪৩৬ দশমিক ০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা জেলার সর্বোচ্চ।
তিনি আরও বলেন, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর জেলা ভারি বৃষ্টিপাত হওয়া পূর্বাভাস রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু কবর সাইফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১৩৫, সদর উপজেলায় ১২৬, ডোমার উপজেলায় ১১০ এবং জলঢাকা উপজেলায় ৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদ্দৌলা বলেন, টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে রোববার বিকাল তিনটায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ওই পয়েন্টে নদীর পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার।
তিনি আরও বলেন, রাতে কিছুটা বেড়ে সকালের দিকে পানি কমার পূর্বাভাস রয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের সবকটি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
[প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক]