Published : 17 Dec 2022, 08:49 PM
বরিশালের স্বশিক্ষিত ও মুক্তচিন্তার মানুষ আরজ আলী মাতুব্বরের ১২২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।
শনিবার বিকালে নগরীর অনামী লেনে গণনাট্য সংস্থার উদ্যোগে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় আরজ আলী মাতুব্বরের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, আরজ আলী মাতুব্বর কুসংস্কার দূর করে আলোকিত সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে বিজ্ঞানমনষ্ক জাতি গঠনের আরজ আলীর দর্শন সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে জানাতে হবে। এর মাধ্যমে সমাজ থেকে সব কুসংস্কার দূর হয়ে সুন্দর সমাজ গঠন সম্ভব হবে। মুক্তভাবে চিন্তা করতে পারার জন্য আমাদের আরজ আলী মাতুব্বরের রচনাবলী পাঠ করা উচিত।
গণনাট্য সংস্থার সভাপতি শাহ আজিজুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বীরেন্দ্র নাথ রায়ের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নীপেন্দ্র নাথ রায়, সিপিবি জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দুলাল মজুমদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল আকন, কবি তৌহিদুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা আবুল কাসেম, আরজ আলী মাতুব্বরের নাতি শামীম আলী মাতুব্বর ও ফারুক মল্লিক।
আরজ আলী মাতুব্বর ১৯০০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামছড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আঞ্চলিক ভূস্বামী হওয়ার সুবাদে তিনি ‘মাতুব্বর’ নাম ধারণ করেন।
প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনি নিজের চেষ্টায় জ্ঞানলাভ করেন। ৮৬ বছরের জীবনকালের বড় অংশই তিনি জ্ঞান সাধনায় কাটিয়েছেন এবং নিজেকে একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি বেশ কিছু বই লিখেছেন।
সমাজে জ্ঞান বিতরণের জন্য নিজের সম্পদ দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘আরজ মঞ্জিল পাবলিক লাইব্রেরি’।
তিনি ১৯৮৫ সালে বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্যপদ, ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ লেখক শিবিরের হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার ও ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর (বরিশাল শাখা) সম্মাননা লাভ করেন।
তিনি ১৯৮৫ সালের ১৫ মার্চ বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তার দেহ চিকিৎসা বিজ্ঞানের সেবায় দান করে যান।