সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়েই কাজ করি: গালি দেওয়া সেই ইউএনও

এ ঘটনায় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জেলা প্রশাসন।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2022, 11:05 AM
Updated : 23 July 2022, 11:05 AM

কক্সবাজারের স্থানীয় এক সাংবাদিককে সংবাদ প্রকাশের জেরে গালাগালি করা টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার খসরু তার আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়েই কাজ করেন।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি অডিওতে ইউএনও কায়সারকে একটি অনলাইন পত্রিকার এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে শোনা যায়। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এলে শুক্রবার সমাধানের জন্য দুপক্ষকে ডাকা হয়। সেখানে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান ইউএনও।

সভায় কক্সবাজার প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ইউএনও‘র বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে ইউএনও’র সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘খারাপ আচরণ’ করেছেন বলে স্বীকার করে।

তিনি তার ব্যবহারের জন্য ওই সাংবাদিকের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন জানিয়ে বলেন, “আমার যে শব্দচয়ন ছিল, এটা তো আসলে ঠিক ছিল না। আমি তাকে এটার জন্য সরি বলেছি। আমি আসলে যেকোনো কাজ সবসময় আমাদের সাংবাদিকদের নিয়েই করার চেষ্টা করি তো… যেহেতু আমি আমার আচরণের জন্য উনাকে সরি বলেছি। উনিও এটাতে স্যাটিসফাইড হয়েছেন।”

টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নাফ নদী সংলগ্ন ওয়াব্রাং এলাকায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য কিছু ঘর নির্মাণ করে উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৭টি ঘরে জোয়ার-ভাটা ও বৃষ্টির পানি প্রবেশ করায় পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েন উপকারভোগীরা।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ২১ মিনিটে ঢাকা পোস্ট নামের একটি ওয়েব পোর্টালে 'নিচু জায়গায় নির্মাণ করা উপহারের ঘর পানিতে ভাসছে'- শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি তৈরি পত্রিকার কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম ফরহাদ।

এর জেরে সেদিন রাত সাড়ে ১০টায় টেকনাফে ইউএনও তার সরকারি নম্বর থেকে সাইদুলকে মোবাইলে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। পরে ওই কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিন আল পারভেজ বলেন, “বিষয়টি জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসার পরপরই খোঁজ-খবর নেওয়া হয়। এ নিয়ে শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার শহরের হিলডাউন সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন টেকনাফের ইউএনও এবং ওই সাংবাদিককে নিয়ে এক সভার আয়োজন করে। সভায় কক্সবাজার প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

" সভায় ইউএনও খসরু ও সাংবাদিক সাইদুলেল বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তারা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। পরে ঘটনার জন্য ইউএনও দুঃখ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী সাংবাদিকের কাছে ক্ষমা চান।”

ঘটনাটি পর্যালোচনা করে ইউএনও’র বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান আমিন আল পারভেজ।

এ বিষয়ে সাংবাদিক সাইদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “টেকনাফের ইউএনও ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তার কাছে ‘হাতজোড়’ করে ক্ষমা চেয়েছেন।”