লামায় জুমভূমির জঙ্গল কাটার অভিযোগ রাবার কোম্পানির বিরুদ্ধে

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক ইফতেখার আলম মজুমদার।

বান্দরবান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2022, 01:30 PM
Updated : 29 Oct 2022, 01:30 PM

বান্দরবানের লামায় রাবার কোম্পানির বিরুদ্ধে আবারও ৪০০ একর জুমভূমির জঙ্গল কাটার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

জঙ্গল কাটার প্রতিবাদে শনিবার সকালে লামার সরই ইউনিয়নের লাংকম ম্রো পাড়ার সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।

‘সরই ভূমি রক্ষা কমিটি’ এ বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে।

এতে দেওয়া বক্তব্যে তিন পাড়াপ্রধান লাংকম ম্রো অভিযোগ করে বলেন, ৪০০ একর জুমভূমির মধ্যে স্থানীয়দের লাগানো কলা, পেঁপে ও বিভিন্ন ফলদ গাছসহ জঙ্গল কাটে রাবার কোম্পানির লোকজন। গত ২৩ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ৫০-৬০ জন শ্রমিক সেখানে টানা জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে।

“এর আগেও কলা ও পেঁপেগাছ কেটে ফেলা হয়েছিল। গত ২৬ এপ্রিল জুমভূমি পুড়িয়ে দেওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত কোনো গাছ, বাঁশ কেটে বিক্রি না করতে পারায় আয়ের পথ বন্ধ হয়ে আছে।”

এসব ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এর আগে রেংয়েন পাড়ার একমাত্র খাবার পানি উৎস কলাইয়া ঝিরিতে বিষ ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ করে রেয়েন ম্রো কারবারি।

তিনি বলেন, “আমাদের বসবাসের জায়গার মধ্যে কোনো রাবার চারা নেই। আমরা রাবার কোম্পানির কোনো জমিতে বসবাস করছি না। আগে থেকে বনজঙ্গল কেটে বসবাসের উপযুক্ত করে বসতি গড়ে তুলেছি।

“এই জমি রক্ষা করতে গিয়ে রাবার কোম্পানির হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। তারা পাড়াবাসীর বিরুদ্ধে বার বার হয়রানিমূলক মামলা দিচ্ছে।”

তার পাড়ায় রেংয়ুং ম্রো নামের একজনের ৩০০টি কলাগাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রেয়েন।

সরই ভূমি রক্ষা কমিটির আহ্বায় রুংধনজন ত্রিপুরা বলেন, ম্রো ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ৪০০ একর ভূমি রক্ষায় এখন পর্যন্ত আন্দোলন করে যাচ্ছেন তারা। এতে রাবার কোম্পানি ভয়-হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের প্রথাগত ভূমিতে কোনো ফলদ বাগান, আমের চারা ও জুমচাষ করতে গেলে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। অথচ লামা রাবার কোম্পানি নামে-বেনামে জমি দখল করে আছে।

সরই ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য মথি ত্রিপুরা সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন স্থানীয় বাসিন্দা রুনলে ম্রো ও প্রেংনাই ম্রো।

তবে পাড়াবাসীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক ইফতেখার আলম মজুমদার।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, ৪০০ একরের জায়গায় নয়। সেখান থেকে আরও চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরে লামা রাবার ইন্ডাট্রিজের বরাদ্দকৃত প্লটে জঙ্গল পরিষ্কার করা হয়েছিল।

সেসব ছবি ফেইসবুকে দিয়ে কোম্পানির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, “১৪৪ ধারা জারি করা জায়গা থেকে দূরে ২০০০ সালে সৃজন করা রাবার প্লান্টেশনে রুটিনমাফিক জঙ্গল পরিষ্কার করা হচ্ছে।”