এ বছরের ৬ মে বাক্সগুলোতে মিলেছিল এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকা।
Published : 19 Aug 2023, 12:00 PM
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে এবার ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। টাকার পাশাপাশি ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, রিঙ্গিত, দিনারসহ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে দানবাক্স কমিটির আহ্বায়ক ও কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে মসজিদের আটটি দানসিন্দুক খোলা হয়।
এ সময় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সর্বশেষ এ বছরের ৬ মে বাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ৩ মাস ৬ দিন পর খোলা বাক্সগুলো থেকে পাওয়া গিয়েছিল ১৯ বস্তা টাকা। তাতে মিলেছিল এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকা।
এবার তিন মাস ১৩ দিন পর শনিবার খোলা দানসিন্দুক থেকে প্রথমে ২৩টি বড় বস্তায় বস্তায় টাকা ভরা হয়। এর পরই শুরু হয় টাকা গণনার কাজ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, গণনায় মসজিদ-মাদ্রাসার ১৩৮ জন ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মসজিদ-মাদ্রাসার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দুই শতাধিক মানুষ অংশ নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, গণনার পর দানবাক্স থেকে পাওয়া সব টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হবে। এই টাকা থেকে পাগলা মসজিদ এবং মসজিদ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়।
একইসঙ্গে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুঃস্থদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক কাজেও এ টাকা প্রদান করা হয় বলে জানান তিনি।
কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকার পাগলা মসজিদ জেলার অন্যতম ধর্মীয় স্থাপনা। সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
মসজিদ কমপ্লেক্সের অধীনে আছে মাদ্রাসা ও এতিমখানা।
জেলা প্রশাসক আজাদ জানান, বর্তমানে পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সকে ঘিরে একটি বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন হলে মসজিদ কমপ্লেক্স আরও দৃষ্টিনন্দন হবে।
ঐতিহাসিকদের দাবি,প্রায় পাঁচশ বছর আগে বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামে এক ব্যক্তি নরসুন্দা নদীর তীরে নামাজ আদায় করতেন।
পরবর্তী সময়ে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
আরও পড়ুন