বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পুনর্নিয়োগের পর থেকে পাঁচ কর্মদিবসে সূচক বাড়ল ১৭৩ পয়েন্ট।
Published : 05 May 2024, 05:06 PM
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কমিশনারদের পুনঃনিয়োগের পর থেকে পুঁজিবাজারের টানা পতন থেমে গেছে উত্থানের পথে। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে চার দিন বেড়ে সূচকে যোগ হল ১৭৩ পয়েন্ট।
গত ২৮ এপ্রিল বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে চার বছরের জন্য পুনর্নিয়োগ দেওয়ার আদেশ আসার দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স বাড়ে ৯৭ পয়েন্ট। তবে পরের কর্মদিবসেই সূচক কমে ৪৬ পয়েন্ট।
এরপর টানা তিন কর্মদিবসে বাড়ল ১২৩ পয়েন্ট। এর মধ্যে ৩০ এপ্রিল ১৪ পয়েন্ট, ২ মে ৩০ পয়েন্ট এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার বাড়ল ৭৬ পয়েন্ট।
কেবল সূচক নয়, বাড়তে শুরু করেছে লেনদেনও। উত্থান শুরুর আগে ২৫ এপ্রিল হাতবদল হয়েছিল ৫১১ কোটি টাকার শেয়ার। সেটি বাড়তে বাড়তে ছাড়িয়েছে ৮১৭ কোটি টাকা যা গত ৫ মার্চের পর সর্বোচ্চ।
দিন শেষে দাম বেড়েছে ২৫৯টি কোম্পানির, কমেছে ৯৮টির, আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ৪৪টি।
বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চার বছরের মেয়াদ শেষ হতে থাকলে তাদের পুনর্নিয়োগ হবে কি না, এ নিয়ে জল্পনা কল্পনার মধ্যে গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে পুঁজিবাজারে শুরু হয় দরপতন।
পতন শুরু হওয়ার আগের দিন সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্ট। সে সময় পুঁজিবাজারে ছিল ঊর্ধ্বগামী, সেদিন লেনদেন ছিল ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকার বেশি।
সেখান থেকে পড়তে পড়তে গত ২৫ এপ্রিল সূচক নামে ৫৫১৮ পয়েন্টে, লেনদেন দাঁড়ায় ৫১১ কোটি টাকায়।
এর ১০ দিন আগে ১৫ এপ্রিল লেনদেন ছিল ৩৬৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
১১ ফেব্রুয়ারি বাজার মূলধন ছিল প্রায় ৭ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা। ২৫ এপ্রিল তা নেমে আসে ৬ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকায়। বাজার থেকে হাওয়া হয়ে যায় ৭৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সেখান থেকে এই কয় দিনে ফিরেছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি।
দিনের চিত্র
সকাল পুঁজিবাজারে ছিল সুবাতাস। সময় গড়াতে থাকলে বাজার আরো বাড়তে থাকে।
সকাল দশটায় লেনদেন শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিটেই সূচক বাড়ে ৪৭ পয়েন্ট। এরপর কিছুটা কমলেও পরে বাড়তে থাকে সূচক। বেলা সাড়ে ১২টার দিনে সূচক দাঁড়ায় ৫ হাজার ৭০২ পয়েন্ট। দিন শেষে সেখান থেকে ২০ পয়েন্ট কমে সূচক স্থির হয় ৫ হাজার ৬৯২ পয়েন্টে।
আগের দিন লেনদেন শেষ করেছিল পাঁচ হাজার ৬১৫ পয়েন্টে।
এদিন ১৩টি কোম্পানির দর সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে, অর্থাৎ এক দিনে যে পর্যন্ত বাড়া সম্ভব, বেড়েছে ততটাই। আরো একটি কোম্পানির দর বেড়েছে সার্কিট ব্রেকারের কাছাকাছি।
আরো তিনটি কোম্পানির দর ৮ শতাংশের বেশি, ৭টির দর সাত শতাংশের বেশি, ১৩টির দর ৬ শতাংশের বেশি, ২২টির দর ৫ বা পাঁচ শতাংশের বেশি, ২৩টির দর চার শতাংশের বেশি, ৩৮টি কোম্পানির দর বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি।
ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারী মোহাম্মদ ইব্রাহীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘বাজার অনেক সংশোধন হয়েছে। সেটা শেষে দর বৃদ্ধি পাওয়ার কথা, সেই সময়টি মনে হয় শুরু হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ বাড়াবেন, যাদের শেয়ার দর কমে গিয়েছিল তারা লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন।’’
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘বাজার ঘুরে দাঁড়াতে কমিশন সহায়ক ভূমিকা রাখছে। বাজার নিয়ে যারা অপপ্রচার করছিল তাদের কয়েকজনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। বিনিয়োগ করার মতো যথেষ্ট শেয়ার এখনো বাজারে আছে, তা বিনিয়োগকারীরা জানতে পেরে বিনিয়োগ বাড়াতে শুরু করেছেন। এতেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছে বাজার।’’