টাঙ্গাইলে বাস ও মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ৬

ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। বাকিরা মারা যান হাসপাতালে নেওয়ার পর

এম এ রাজ্জাকটাঙ্গাইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2022, 08:19 AM
Updated : 6 Oct 2022, 08:19 AM

টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজার অদূরে বাস ও মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছে; আহত আরও অন্তত সাত জন। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তের টোল প্লাজার আগের গোলচত্বর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম জানান।  

নিহতদের মধ্যে চারজন মাইক্রোবাসের এবং দুইজন যাত্রীবাহী বাসের আরোহী বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

এরা হলেন মাইক্রোবাস চালক কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কুটুম্বপুর গ্রামে প্রয়াত ফজলুল হকের ছেলে দুলাল হোসেন (৫২), তার সহকারী একই এলাকার জগল চন্দ্র শীলের ছেলে সুশীল চন্দ্র শীল (৪৫), যাত্রী বগুড়া সদর উপজেলার জলেশ্বরীতলা জজকোর্ট এলাকার হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী মালিকা বানু রুবি (৬৫) ও ছেলে রিফাত আল হাসান (৪০)।

নিহত বাসযাত্রীরা হলেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের যশোর অঞ্চলের যুগ্ম-পরিচালক পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার জোড়দহ এলাকার ইমতাজ আলী প্রামানিকের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম (৫৫) ও নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আগ্রান গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে তাহসিন (৬)। 

বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার এএসআই মো. শফিকুল ইসলাম অন্তত ৭ জন আহত হয়েছে বলে জানালেও তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। 

বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম জানান, রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী একতা পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আইল্যান্ডের ওপর দিয়ে  অপর লেনে যায়। এতে ওই সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গগামী একটি মাইক্রোবাসের সাথে সংঘর্ষ হয়।

“ঘটনাস্থলে মাইক্রোবাসের চালকসহ তিনজন নিহত হন। আহত অবস্থায় অন্তত দশজনকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নেওয়ার সময় আরেও তিনজন মারা যান।” 

ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই  দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো সরিয়ে নেওয়া হয় এবং মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

দুপুরে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আল আমিন জানান, দুর্ঘটনায় আহত সাত জনকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  

বাসযাত্রী মোছা. জান্নাতুল খাতুন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকার উদ্দেশে একতা পরিবহন নামের এই বাসটিতেই যাত্রা করেন। বঙ্গবন্ধু সেতুতে ওঠার পর ঘুমিয়ে যান। তারপর হঠাৎ করেই বিকট শব্দ হওয়ায় তিনি বুঝতে পারেন বাসটি দুর্ঘটনায় পড়েছে। 

আরেক যাত্রী রাসেল জানান, বাসটি ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আইল্যান্ডে বাড়ি খেয়ে বিপরীতমুখী লেনে গেলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। তিনি নাটোর থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন। 

এলেঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন অফিসার মো. আতাউর রহমান জানান, খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থল পৌঁছে তিনজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় এবং টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আরও তিনজন।  

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক আতাউল গণি ও পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানিয়েছেন, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে বিশ হাজার করে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল হাশেমের নেতৃত্বে বিআরটিএ, বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম জানান, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিজ নিজ পরিবারের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন। নিহতদের পরিবারের কেউ অভিযোগ করলে প্রচলিত আইনে মামলা করা হবে।