মুন্সীগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ১ জনের মৃত্যু

এই ঘটনায় করা দুটি মামলায় জেলা বিএনপি নেতাসহ ৭/৮শ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিজ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2022, 04:42 PM
Updated : 22 Sept 2022, 04:42 PM

মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষে আহত একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে আইসিইউতে তিনি মারা যান বলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান।

মৃত শহীদুল ইসলাম শাওন (২৬) মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিমের মুরমা গ্রামের অটোরিকশা চালক সোয়াব আলী ভুইয়ার ছেলে। বাবা-মা ও স্ত্রী ছাড়াও তার আট মাস বয়সের এক ছেলে রয়েছে।

সবজি বিক্রেতা শাওন মিরকাদিম ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন বলে মিরকাদিম পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. জসিমউদ্দিন জানিয়েছেন।  

বুধবার মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে বিএনপির সামাবেশ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি আহত হন।

সংঘর্ষে পুলিশের রাবার বুলেটে শাওন আহত হন বলে জসিমউদ্দিনের অভিযোগ।

তবে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব তা অস্বীকার করে বলেন, পুলিশের বুলেটে নয়, অন্য কোনোভাবে শাওন আহত হন। এই সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেকের করা মামলার ৩ নম্বর আসামি শাওন।

বাচ্চু মিয়া জানান, মুন্সীগঞ্জে সংঘর্ষে আহত জনকে এই হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে শাওনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল; রাতে সেখানে তিনি মারা গেছেন।

তিনি আরও জানান, অপর দুই জন হলেন জাহাঙ্গীর (৪০) ও তারেক (২২)। জাহাঙ্গীর ক্যাজুয়ালটি বিভাগের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে ছিলেন; বিকালে অন্যত্র চলে গেছেন। এছাড়া তারেককে তার স্বজনরা মিরপুরের ডেলটা হাসপাতালে নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে তিন কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বুধবার মুক্তারপুরে বিএনপির সামাবেশ থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে পুলিশ ও তিন সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

এ সময় সদর উপজেলার পুরোনো ফেরিঘাট এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের লাঠিপেটায় আহতের ঘটনা ঘটে। পুলিশ টিয়ার শেল ও শটগানের গুলিও ছোড়ে।  

মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অর্থ) সুমন দেব জানান, এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশের উপর হামলা, অস্ত্র লুটের চেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেন এসআই মাঈনউদ্দিন।

“মামলায় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতনকে প্রধান আসামি করে ৩১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৭/৮শ জনকে আসামি করা হয়েছে।”

সদর থানার এসআই মাঈনউদ্দিনের দায়ের করা এই মামলায় ২৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, দোকানপাট ভাংচুর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগে আরেকটি মামলা করেছেন মুক্তারপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মালেক।

এতে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মহিউদ্দিন আহমেদকে প্রধান আসামি করে ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন:

Also Read: সংঘর্ষে মুক্তারপুর রণক্ষেত্র, পুলিশ ও বিএনপির আহত শতাধিক