শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর বলেন, “আমি এ কথা তাদের বলেছি, যারা হোসেন সরদারকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো এবং যারা নৌকার বিরুদ্ধে সরব। আমার উদ্দেশ্য কাউকে ধমকানো বা হুমকি দেওয়া নয়।”
Published : 19 Dec 2023, 08:49 PM
মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও নৌকার প্রার্থী শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান নিজেদের নির্বাচনি এলাকার বাইরে ভোটের প্রচারে গিয়ে নৌকার বিপক্ষে কথা না বলতে শাসিয়েছেন।
সোমবার রাতে সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকায় এ কথা বলেন আসিবুর।
মাদারীপুর-৩ (সদর আংশিক-কালকিনি-ডাসার) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সোবহান মিয়ার পক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে।
যদিও আসিবুরের দাবি, কাউকে হুমকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি ওই বক্তব্য দেননি।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য।
তার ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়েছে। সেখানে তাকে বলতে শোনা গেছে, “আমরা কয়েকজন মিলে এই টেকেরহাটে এসেছিলাম নৌকার পক্ষে প্রচারণা করতে। আমাদের প্রিয় মুখ মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ মিয়া চাচার সপক্ষে কাজ করার জন্য।
“কিন্তু একদল ‘সন্ত্রাসী’ এখানে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেছে। এই টেকেরহাটকে নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। যারা এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন তাদের কঠোরভাবে জানাতে চাই, আমরা এখনও ঠাণ্ডা আছি, ঠাণ্ডা থাকতে দেন। যদি একবারও মাথা গরম করি, তাহলে আপনি মাদারীপুর কেন, বাংলাদেশেও থাকতে পারবেন না “
জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরও বলেছেন, “আমাদের এক কর্মীকে ‘ষড়যন্ত্রকারীরা’ তুলে নিয়ে গিয়েছিল; তাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছে। এই টেকেরহাটে যদি কোনো রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, নৌকার বাইরে যদি একজনও কোনো রকম কথা বলে, এমনকি গলা উঁচু করে কথা বলার চেষ্টা করে, তাহলে গলা কিভাবে আমরা নামাবো, সেটা ভাল করেই জানি।
“এখন সাবধান করে গেলাম, এরপর সামনে আমরা কঠোরভাবে আসবো।”
আসিবুরের বক্তব্য প্রসঙ্গে মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম সিদ্দিকী বলেন, “নির্বাচনের সময়ে শাজাহান খানের ছেলে প্রকাশ্য এমন বক্তব্য দিয়ে সাধারণ জনগণকে ভয় দেখাতে পারেন না। এটা নির্বাচনের আচরণবিধি ভঙ্গের সামিল।”
এ ঘটনায় তারা লিখিত অভিযোগ দেবেন বলেও জানান কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খান বলেন, “হুমকির বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ছাড় পাবে না।”
আসিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি গোলাপ চাচার পক্ষে নির্বাচনি প্রচার করতে গিয়েছিলাম। তখন হোসেন সরদার নামের এক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে একদল সন্ত্রাসী তুলে নিয়ে যায়। তার গায়ে হাত তুলেছে এবং তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। পরে পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করার পর আমি ওই বক্তব্য দেই।
নৌকার বাইরে গলা উঁচু করলে, নামিয়ে দেব- এটা কাকে উদ্দেশ্য করে বলা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি এ কথা তাদের বলেছি, যারা হোসেন সরদারকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো এবং যারা নৌকার বিরুদ্ধে সরব। আমি খুবই নম্রভাবে এ কথা বলেছি, আমার উদ্দেশ্য কাউকে ধমকানো বা হুমকি দেওয়া নয়। আপনারা পজেটিভ নিউজ করলে খুশি হব।”