চুরি হওয়া সরঞ্জামের মধ্যে ১১ ভরি ৪ আনা সোনা ও নগদ ১ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ।
Published : 21 Jan 2024, 07:11 PM
ফেনীতে একটি সোনার দোকান থেকে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকার কিছু অংশ উদ্ধার এবং এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তারের খবর জানিয়েছে পুলিশ।
১১ জানুয়ারি ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর বাজারে ‘আলাদিন জুয়েলার্সে’ এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন দোকান মালিক আলাউদ্দিন।
রোববার দুপুরে জেলার পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান সংবাদ সম্মেলনে জানান, আগের রাতে গ্রেপ্তার ছয় আসামির মধ্যে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে তুলে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন-কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার মো. আলাউদ্দিন (৩০) ও মো. মিজান (২৮), হোমনা থানার মো. সজিব ওরফে সুমন ওরফে শুক্কুর (২৬), দেবিদ্বার থানার মো. শফিক ওরফে সোহেল ওরফে দাঁতলা শফিক (৩২), চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানার মো. ফরহাদ (৩৯) ও একই জেলার বাকলিয়া থানার মো. বাদশা চৌধুরী (২৩)।
পুলিশ সুপার বলেন, আসামি ফরহাদ ও বাদশাসহ আরও দুইজন (পলাতক আসামি) ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ১০ জানুয়ারি ফাজিলপুর বাজারে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে ‘আলাদিন জুয়েলার্স’ দুপুরে বন্ধ ও খোলার সময় এবং আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার অবস্থান রেকি করেন।
সেদিন দুপুরে মালিক খাবার খেয়ে এসে বেলা ৩টার দিকে দোকান খুললে আলাউদ্দিন ও ফরহাদ সেখানে গিয়ে মালিকের সঙ্গে দরদাম করে ১২শ’ টাকা দিয়ে একটি নাক ফুল কেনেন। ঠিক ওই সময় আরও তিনজন দোকানের কোথায় কী স্বর্ণালংকার রয়েছে তা দেখে নেয়। সহজে কীভাবে সাটার কেটে ঢোকা যায় তাও রেকি করে তারা।
আলাদিন জুয়েলার্সের পাশের গলি ও সেলুনসহ সামনের পথের সবজির দোকান কীভাবে পাহারা দিতে হবে এবং চুরির পর কোন পথে সহজে পালানো যাবে তাও চোরের দল যাচাই করে বলে জানান পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
জাকির আরও বলেন, “পরিকল্পনা অনুযায়ী ১১ জানুয়ারি আলাদিন জুয়েলার্সের মালিক দুপুরে দোকান বন্ধ করে যাওয়ার পর বাদশার নেতৃত্বে যে যার মত অবস্থান নেয়। এ সময় আলাউদ্দিন সাটারের তালা কাটে আর বাকিরা গলির পথে পাহারায় থাকে। শফিক ব্যাগ নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে এবং এক পর্যায়ে ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণ ও ক্যাশে থাকা নগদ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
“এ সময় চোরেরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে ফাজিলপুর বাজার থেকে মহাসড়কে ওঠে। সেখান থেকে লোকাল বাস ধরে প্রথমে ফেনী সদর ও পরে আবার লোকাল বাসে কুমিল্লায় পালিয়ে যায়।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন বলেন, “এ ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় মামলা হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। পরে চুরি হওয়া স্বর্ণ ও টাকার মধ্যে ১১ ভরি ৪ আনা সোনা ও নগদ ১ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করে। এছাড়া সাটার কাটার সরঞ্জামসহ বিভিন্ন জিনিসও উদ্ধার করা হয়েছে।”
এ মামলায় সন্দেহভাজন আরও ছয়জন পলাতক রয়েছেন বলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অংপ্রু মারমা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্য ও সিসি ফুটেজ দেখে এই ছয়জনকে সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ফেনী মডেল থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, থানার রেকর্ড পর্যালোচনা করে আসামি শফিক ওরফে দাতলা শফিকের বিরুদ্ধে ১৩টি ও আসামি আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় সাতটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া বাদশার বিরুদ্ধে সাতটি, সুমনের বিরুদ্ধে ছয়টি, ফরহাদের বিরুদ্ধে পাঁচটি ও মিজানের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি।